সিপিএ ও আইপিইউর শীর্ষ পদে বিজয় জনগণের প্রতি উৎসর্গ করে দেশের উন্নয়নে ঐক্যবদ্ধবাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সংসদীয় দুই ফোরামের নবনির্বাচিত শীর্ষ নেতা শিরিন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরী।
Published : 22 Oct 2014, 11:39 PM
বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর ভোটে দুই ফোরামের শীর্ষ পদে জয় ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন তারা।
বুধবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) নবনির্বাচিত চেয়ারপারসন শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) নতুন প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরীকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করেন শিরিন শারমিন ও সাবের হোসেন।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদও এ সময় মঞ্চে ছিলেন।
অনুভূতি জানাতে গিয়ে বক্তব্যের শুরুতে স্পিকার শিরিন শারমিন বলেন, “দেশের এ শুভ লগ্নে আমি আনন্দিত, সম্মানিত, গৌরবান্বিত ও অনেকখানি আবেগাপ্লুত। আজকের এ দিনটি আমার জীবনে বিশেষভাবে স্মরণীয় দিন।”
সিপিএ ও আইপিইউ- দুই আন্তর্জাতিক ফোরামেই বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশের সংসদের সদস্যদের ভোটে বাংলাদেশ জয় পেয়েছে বলে জানান তিনি।
“এ বিজয় বাংলাদেশের জন্য বিরল গৌরব বয়ে এনেছে। এ বিজয় বাংলাদেশের জনগণের, এটা গণতন্ত্রের বিজয়। বিজয়ের মধ্য দিয়ে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের অবস্থান আজ সুস্পষ্ট,” বলেন তিনি।
আইপিইউর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় সাবের হোসেন চৌধুরীকে অভিনন্দন জানিয়ে স্পিকার বলেন, আইপিইউ প্রেডিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে দেশকে এক ‘উচ্চমাত্রায়’ নিয়ে গেছেন তিনি।
বাংলাদেশ আর ‘তলাবিহীন ঝুড়ি নয়’ মন্তব্য করে দেশের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন স্পিকার।
দুই ফোরামে জয় সহজ ছিল না জানিয়ে শিরীন শারিমন বলেন, “সুকঠিন পথ পাড়ি দিয়ে এ বিজয় এসেছে। প্রচেষ্টা ও প্রত্যয়ের সম্মিলনে এসেছে এ জয়।”
এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “এ বিজয় যেমন বাংলাদেশের, জনগণের; তেমনি এ বিজয় নেতৃত্বের, সংসদ নেতার। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
এ বিজয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে বলে মনে করছেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
তিনি বলেন, “এ বিজয় ও এ সংবর্ধনা শুধু ব্যক্তির জন্য নয়; দেশকে, দেশের মানুষকে সম্মানিত করছি ও সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা প্রকাশ করছি।
“এ বিজয়ে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের আস্থার প্রতিফলন ঘটেছে। বিশ্ব পার্লামেন্টারিয়ানদের আস্থা পরিলক্ষিত হয়েছে।”
সাধারণ সংসদ সদস্য হয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ ফোরামের শীর্ষ পদে নির্বাচিত হওয়ায় অন্যদেরও দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ দেন সাবের হোসেন চৌধুরী।
“সংসদ সদস্য পদটি অনেক বড়। হালকাভাবে নেবেন না একে। সংসদ সদস্য হলেই পতাকা পেতে হবে, মন্ত্রী হতে হবে- সেটা কিন্তু নয়। সংসদ সদস্য হয়ে অনেক কিছু করা যায়।”
শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয় এবং ক্রিকেট দলের টেস্ট স্ট্যাটাস লাভের কথা মনে করিয়ে দেন বিসিবির সাবেক প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী।
লক্ষ্য স্থির করে আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে সাফল্য অর্জন সম্ভব-মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সে কারণেই সংসদ সদস্য হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী স্পিকারকে পরাজিত করে এ জায়গায় অবস্থান অর্জন করা সম্ভব হয়েছে।
“সুতরাং যারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন তারা কখনো সাহস হারাবেন না। হোঁচট খেতে পারেন, সাময়িকভাবে পিছিয়ে পড়তে পারেন। যদি বিশ্বাস রাখেন, নিয়ত পরিষ্কার থাকলে আপনি এগিয়ে যাবেন।”
নতুন দায়িত্ব সফলভাবে পালনের প্রত্যয় জানিয়ে সাবের বলেন, “বিশ্বের গণতান্ত্রিক ১৮৫টি দেশের নেতৃত্ব দিয়ে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। এ অর্জনকে পুঁজি করে, মূল্যবোধ নিয়ে কল্যাণময় রাষ্ট্র গঠনে ভূমিকা রাখতে হবে।”
গত ৯ অক্টোবর ক্যামেরুনের রাজধানী ইয়াউনদে-তে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের ৬০তম সম্মেলনে সরাসরি ভোটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন শিরীন শারমিন।
এরপর সপ্তাহ না ঘুরতেই ১৬ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় বিশ্বের ১৬৪টি দেশের আইনসভার সংগঠন ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের ১৩১তম সাধারণ অধিবেশনে ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সাবের হোসেন চৌধুরী।