অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নসহ ১০ দফা দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা।
Published : 27 Sep 2014, 10:27 PM
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিইউজে) আয়োজিত এই প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর একাংশের সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।
সমাবেশের বক্তৃতায় তিনি বলেন, “ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা হলে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা খুশি হন। আর নতুন ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা হলে আনন্দিত হওয়ার কথা থাকলেও, আমরা তা হতে পারি না।
“আমাদের ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের জন্য আন্দোলন করতে হয়।”
বুলবুল বলেন, “ঢাকা ও চট্টগ্রামে নিয়ম না মানা অনেক সংবাদপত্র মালিক আছেন। সাংবাদিকদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে উল্লেখ করে সরকার সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে। আমি সরকারকে বলবো, আগে নিয়ম না মানা মালিকদের নিয়ন্ত্রণ করুন।
“মালিক ভালো হলো, নিয়মমত বেতন-ভাতা পরিশোধ করলে এমনিতেই ভালো সাংবাদিক তৈরি হবে। সাংবাদিকদের জন্য নয় আগে মালিক পক্ষের জন্য নীতিমালা করুন।”
সমাবেশের অন্যান্য দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, সাংবাদিক ছাঁটাই ও সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ, টেলিভিশন সাংবাদিকদের জন্য স্বতন্ত্র ওয়েজ বোর্ড ঘোষণা, পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ইত্যাদি।
গণমাধ্যমের মালিকদের উদ্দেশ্যে বুলবুল বলেন, “সংবাদপত্র-টেলিভিশনের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে মালিকরা অন্য দশটা ব্যবসা করবেন, গাড়ি-বাড়ি, অফিস, ক্যামেরায় টাকা খরচ করবেন। অথচ সাংবাদিক আর ক্যামরার পেছনে থাকা মানুষরা ঠিকমত বেতন পান না।
“আপনি স্থায়ী আয় করবেন, অথচ সাংবাদিকদের নিয়োগপত্র দেবেন না এটা মেনে নেব না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। প্রয়োজনে সরকারকে বলে শুল্কমুক্ত নিউজপ্রিন্ট, সরকারি বিজ্ঞাপনসহ সব সুবিধা বন্ধ করা হবে।”
বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বিষয়ে বুলবুল বলেন, “টেলিভিশনের মালিকরা পকেট ভর্তি টাকা নিয়ে টেলিভিশনের লাইসেন্স নেন। কিন্তু সাংবাদিকদের কতো টাকা বেতন দেন তা শুধু আল্লাহই জানে।
“আমি জানি চট্টগ্রামে একটি টেলিভিশনের সাংবাদিককে নিয়োগ দেয়া হয়েছে এই শর্তে যে- ‘বেতন পাবেন না। উল্টো মাসে মাসে ঢাকায় টাকা পাঠাতে হবে,’ এই হলো অবস্থা।”
এসময় সাংবাদিক নেতা বুলবুল অনলাইন সাংবাদিকতার নীতিমালা করারও দাবি জানান।
৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে চট্টগ্রামে কর্মরত সব সাংবাদিকের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে সমাবেশ থেকে সংবাদপত্র মালিকদের সময় বেঁধে দেয়া হয়।
এছাড়া সিইউজে সভাপতি এজাজ ইউসুফী ১০ অক্টোবরের মধ্যে সপ্তম ওয়েজ বোর্ডের সব বকেয়া পরিশোধ এবং অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন না হলে, ১৫ অক্টোবর থেকে সভা-সমাবেশ-ঘেরাও-অনশন এবং ধর্মঘটের মত কর্মসূচির আল্টিমেটাম দেন।
সিইউজে’র যুগ্ম সম্পাদক ম. শামসুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএফইউজের সহ-সভাপতি আবু তাহের মোহাম্মদ, যুগ্ম মহাসচিব আসিফ সিরাজ, সিইউজের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, সিইউজে সহ-সভাপতি রতন কান্তি দেবাশীষ, সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, মোস্তাক আহমেদ ও শহীদুল আলম প্রমুখ।