ছাপার ভুলের কারণে বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা আইনসভার হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব সংসদে তোলার শুরুতেই সংশোধনী আনতে হল আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে।
Published : 07 Sep 2014, 10:23 PM
রোববার সংসদে ‘সংবিধান (ষোড়শ সংশোধন) বিল-২০১৪’ উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী। উত্থাপনের পর পরীক্ষার জন্য এটি আইন, বিচার ও সংসদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
আইনমন্ত্রী বিল উত্থাপনের সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীকে উদ্দেশ করে বলেন, “মাননীয় স্পিকার, বিলে একটু সংশোধনী রয়েছে।”
প্রস্তাবিত আইনের প্রস্তাবনায় বলা ছিল- “...যেহেতু সামরিক শাসক অসাংবিধানিক পন্থায় ১৯৭২ সালের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৬ সামরিক ফরমান ‘সেকেন্ড প্রোক্লামেশন (ফিফটিনথ অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডার-১৯৭৮’ এর ‘সেকেন্ড শিডিউল’ দ্বারা পরিবর্তনক্রমে সুপ্রিম কোর্টের কোন বিচারককে অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের অভিযোগে অপসারণের ক্ষমতা জাতীয় সংসদের পরিবর্তে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এর নিকট ন্যস্ত করা হয়...”
বিলটি উত্থাপনের সময় আইনমন্ত্রী পাঠ করেন, “.... অসদাচরণ বা অসামর্থ্যের অভিযোগে অপসারণ ক্ষমতা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল এর নিকট ন্যস্ত করেন।”
এসময় ‘জাতীয় সংসদের পরিবর্তে’ শব্দগুলো বাদ দেন আইনমন্ত্রী, যদিও সংসদ সদস্যদের কাছে সরবরাহ করা কপিতে এই শব্দগুলো রয়ে গিয়েছিল।
পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে ন্যস্ত করা হয়নি।
বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ১৯৭৫ সালে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছ থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে ন্যস্ত করা হয়।
পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের কাছে ন্যস্ত হয়। জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকারের আমলে এক সামরিক আদেশে তা করা হয়েছিল।
এই কারণে মন্ত্রী বিলের ভূমিকার ‘১৯৭২ সনের’ এবং ‘জাতীয় সংসদের পরিবর্তে’ শব্দগুচ্ছ বাদ দিয়ে প্রস্তাবনা পড়ে শোনান।
বিল উত্থাপনে ৭ মিনিট
সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বিল সংসদে উত্থাপন করা হয়।
বিল উত্থাপনের অনুমতি থেকে বিলটি সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো পর্যন্ত ৬ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড সময় লেগেছে।
দিনের কার্যসূচি অনুযায়ী আইন প্রণয়ন কার্যাবলিতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বিল উত্থাপনে অনুমতি নিতে বলেন আইনমন্ত্রীকে।
“সংশোধনী আকারে বিলটি উত্থাপন করা হবে।”
স্পিকার উত্থাপন করতে বললে আইনমন্ত্রী বিলের ভূমিকা বলতে শুরু করেন, “যেহেতু সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭ অনুযায়ী....।”
মন্ত্রী চার মিনিট ধরে বিলের সংক্ষিপ্ত শিরোনামের আগ পর্যন্ত পড়লে স্পিকার এতটুকু না পড়ে শুধু বিলের নামোল্লেখ করে উত্থাপন করতে বলেন।
এসময় আশপাশের সংসদ সদস্যদের মধ্য থেকে বলতে শোনা যায়, নতুন তো তাই এমন হচ্ছে।