সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনের মাধ্যমে বিচারপতিদের হাত-পা বেঁধে দেয়া হচ্ছে বলে বিএনপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আশ্বস্ত করেছেন, বিচারের জন্য কোনো বিচারপতি অভিশংসনের মুখোমুখি হতে হবে না।
Published : 07 Sep 2014, 08:13 PM
বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা আইনসভার হাতে ফিরিয়ে দিতে রোববার সংসদে বিল উত্থাপনের আগে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের একথা বলেন মন্ত্রী।
একই দিন আরেক অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ‘অবৈধ’ সংসদে সংবিধান সংশোধনের এই উদ্যোগের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, “এরকম একটি সংসদের কাছে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা দেয়া হলে এটি হবে একটি বিশেষ দলের সিদ্ধান্ত। এতে দেশে ন্যায়বিচার থাকবে না।”
১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় এর ৯৬ অনুচ্ছেদের বলে উচ্চ আদালতের বিচারকদের পদের মেয়াদ নির্ধারণ ও তাদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে ছিল।
এর দুই বছর পর ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীর (বাকশাল গঠন) মাধ্যমে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির হাতে ন্যস্ত হয়।
চতুর্থ সংশোধনী বাতিল হলে জিয়াউর রহমানের সামরিক সরকারের আমলে এক সামরিক আদেশে বিচারপতিদের অভিশংসনের জন্য সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করা হয়।
এখন পর্যন্ত তা-ই বলবৎ রয়েছে। ওই আইন সংশোধন করে সংসদের হাতে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে ষোড়শ সংশোধন হচ্ছে।
সংসদে যাওয়ার আগে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে একটি অনুষ্ঠান শেষে এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, “বিচারপতিদের রায়ের সাথে অভিশংসনের কোনো সম্পর্ক নেই। রায়ের জন্য তারা অভিশংসনের মুখোমুখি হবেন না। সংসদ কর্তৃক অভিশংসন ব্যবস্থায় বিচারকদের স্বাধীনতা এক বিন্দুও ক্ষুণ্ন হবে না।”
“কেবল বড় ধরনের অসদাচরণ ও অযোগ্যতার অভিযোগ প্রমাণিত হলেই বিচারপতিগণ অভিশংসনের সম্মুখীন হবেন; অন্য কোনো কারণে নয়। অভিশংসনের যাতে অপব্যবহার না হয় আইনটি সেভাবেই প্রণীত হবে।”
জেলা ও দায়রা জজ সমপর্যায়ের বিশেষ জজ ও জুডিশিয়াল কর্মকর্তাদের সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী বলেন, দেশে ২০ লক্ষাধিক বিচারাধীন মোকদ্দমার জট কমিয়ে আনা বিচারকদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
অনুষ্ঠানে বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি খন্দকার মুসা খালেদ এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব (দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক বক্তৃতা করেন।