মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে পদ্মায় ডুবে যাওয়া লঞ্চ পিনাক-৬ এ ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ২০০ যাত্রী ছিল বলে স্থানীয়দের উদ্ধৃত করে জানিয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
Published : 04 Aug 2014, 09:51 PM
ঈদফেরত যাত্রীদের চাপের মধ্যে মাদারীপুরের কাওড়াকান্দি ঘাট থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া আসার পথে সোমবার বেলা ১১টার দিকে ডুবে যায় লঞ্চটি।
ঈদ হয়ে যাওয়ার পর এখন কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়া তথা ঢাকার দিকে যাত্রীর চাপ বেশি। অনেকে লঞ্চে নদী পেরিয়ে মাওয়ায় এসে বাস ধরেন। অনেক বাসও যাত্রীদের লঞ্চের মাধ্যমে পার করিয়ে আনে।
সোমবার দুর্ঘটনার পর মাওয়ায় গিয়েও কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়ায় আসা বিভিন্ন ফেরি ও লঞ্চে উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়।
লৌহজং থানার ওসি তোফাজ্জল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,পিনাকের মতো দোতলা লঞ্চের ধারণ ক্ষমতা হয় ১২০ থেকে ১৫০ জন।
“আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি, লঞ্চটি ডোবার সময়ে সেখানে যাত্রীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৩৫০ জন।”
উদ্ধার কাজে অংশ নেয়া এই পুলিশ কর্মকর্তার ধারণা, নদী অশান্ত ছিল বলে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কারণে স্বাভাবিক ভারসাম্য হারিয়ে লঞ্চটি ডুবে গেছে।
মাওয়ার সি বোট ঘাটের ইজারাদার আশরাফ হোসেনও বলেন, “আসলে বছরের এই সময়টাতে নদী কিছুটা অশান্ত থাকে। তাই ধারণ ক্ষমতার বেশি যাত্রী তোলাটা ঝুঁকিপূর্ণ।”
লঞ্চডুবির সময় মাঝনদীতে থাকা ফেরির এক যাত্রীর মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিওতে দেখা যায়, এক মিনিটের কম সময়ে বাম দিকে কাত হয়ে যাত্রীসহ ডুবে যায় পিনাক-৬।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নদীর এপার ওপার যেতে আমাদের সময় লাগে ৫ মিনিটের মতো। লঞ্চটা ডোবার ঘটনাটা ঘটেছিল প্রায় মাঝনদীতে। আমার সেখানে পৌঁছতে সময় লেগেছে ২ মিনিটের মতো।”
লঞ্চটির ডুবে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে দুটি কমিটি করেছে সরকার। নৌ মন্ত্রণালয় এবং সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর গঠিত এই কমিটি দুটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
মাওয়া-কাওড়াকান্দিতে যাত্রী পারাপারে অনেক লঞ্চ চলাচল করলেও তাতে কোনো শৃঙ্খলা নেই বলে ঘাট সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়।
মাওয়ায় পাশাপাশি দুটি ঘাট রয়েছে- লঞ্চঘাট ও সি বোট (স্পিড বোট) ঘাট।
লঞ্চঘাটের দোকানি সোহেল মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত ১ বছর ধরে এই ঘাটে কোনো ইজারাদার নেই। লঞ্চগুলো ইচ্ছামতো চলে। কোনো নিয়ম-নীতি নাই।”
সি বোট ঘাটের ইজারাদার আশরাফ হোসেন বলেন, “ইজারাদার না থাকায় সেই অর্থে ঘাটে কোনো প্রশাসনও কাজ করছে না। ফলে লঞ্চগুলো চলাচলের ক্ষেত্রে কোনো নিয়ম মেনে চলার প্রয়োজনও বোধ করে না।”