কারা ধরে নিয়েছিল, আর কী কারণে ছেড়ে দিল- সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারেননি অপহরণকারীদের কবল থেকে পাঁচ দিন পর উদ্ধার পাহাড়ি সঙ্গীতশিল্পী সৌরভ চাকমা (টিনটিন)।
Published : 19 Apr 2014, 04:08 PM
তিনি বলেছেন, গত ১৪ এপ্রিল রাঙামাটি নানিয়ারচর থেকে অপহরণের পর তাদের কয়েকটি স্থানে রাখা হলেও কোনো ধরনের নির্যাতন চালানো হয়নি।
শুক্রবার রাতে উদ্ধারের পর শনিবার সকালে টিনটিন এবং তার সঙ্গে অপহৃত বন্ধু নবজিৎ চাকমা রিকিকে খাগড়াছড়ির সেনা অঞ্চলে সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তুষার কান্তি চাকমার জামাতা টিনটিনের স্ত্রী ত্রিমিতা চাকমা ঢাকার একটি বিদেশি সংস্থায় তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন।
‘ফুরামন’ নামে একটি সংগীত দলের প্রধান টিনটিন পার্বত্য চট্টগ্রামে বেশ জনপ্রিয় কণ্ঠশিলণ্পী।
ত্রিমিতা চাকমা সাংবাদিকদের জানান, চাকমাদের বিজু উৎসবে অংশ নিয়ে খাগড়াছড়ি থেকে রাঙামাটি ফেরার পথে নানিয়ারচর থানার মহালছড়ির দুর্গম দক্ষিণ কেংড়াছড়ির হেডম্যান পাড়া এলাকায় ৬/৭ জন অস্ত্রধারী টিনটিনের গাড়ি আটকে তাকে তুলে নিয়ে যায়।
টিনটিন অপহরণের পরপরই সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে উদ্ধারে অভিযানে নামে। এর মধ্যেই শুক্রবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে কেংড়াছড়িরতে টিনটিন ও রিকিকে ফেলে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। তখন সেনাসদস্যরা তাকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি নিয়ে আসে।
টিনটিন বলেন, তাদের কী কারণে অপহরণ করা হয়েছিল বা কারা এতে জড়িত ছিল, তার কিছুই বুঝতে পারেননি তারা।
“এই কয়েকদিনে আমাদের একাধিক জায়গায় স্থানান্তর করা হলেও নির্যাতন করা হয়নি। তবে, মাথার ওপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়লেই ভয় লাগত, কোনো অঘটন ঘটে যায় কি না।”
টিনটিন বলেন, তিনি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত নন এবং কারো সঙ্গে তার কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতাও নেই।
অপহরণের পর থেকে বিভিন্ন স্থান থেকে বেনামী ফোন থেকে ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছিল বলে টিনটিনের স্ত্রীর অভিযোগ। অপহরণকারীরা মুক্তিপণও চেয়েছিল বলে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
তবে মুক্তিপণ দেয়া হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে কেউ কোনো কিছু বলেনি।
সেনাকর্মকর্তারা বলেন, সেনাবাহিনীর একটি দল কেংড়াছড়ি এলাকায় পৌঁছলে অপহরণকারীরা টিনটিনদের ছেড়ে পালিয়ে যায়।
উদ্ধার পাওয়ার জন্য সেনাবাহিনীসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন টিনটিন।
টিনটিন অপহরণর ঘটনায় গাড়িচালক উদয়ন চাকমাসহ তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
টিনটিনকে যে এলাকায় অপহরণ করা হয়েছিল, ২০০১ সালে তিনজন বিদেশিকেও অপহরণ করে একমাস আটকে রাখা হয়েছিল।