কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে ‘সর্বাধিক বাজার সুবিধা’ বহাল রাখার কথাই জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
Published : 30 Jun 2013, 10:58 AM
রোববার ইউরোপী ইউনিয়নের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বর্তমানে ইউরোপের বাজারে কেবল অস্ত্র ছাড়া সব ধরনের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পায় বাংলাদেশ।
“জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহারের মতো যে কোনো পরিস্থিতি অবশ্যই এড়াতে হবে, কেননা তেমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হলে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও কর্মসংস্থানের ওপর বড় ধরনের বিরূপ প্রভাব পড়বে।”
যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাশি পণ্যে জিএসপি সুবিধা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত জানানোর পর ইউরোপীয় বাজারে এর প্রভাব নিয়ে ব্যবসায়ীদের আশঙ্কার মধ্যেই ইইউর এই বিবৃতি এলো।
বৃহস্পতিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ফ্রোম্যান এক বিবৃতিতে জানান, কারখানার কর্ম পরিবেশের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসে ১২ শ’র বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি দামের পোশাক কেনে, যা বাংলাদেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ।
এ কারণে ব্যবসায়ীরা বলে আসছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও ইউরোপ একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিলে বাংলাদেশের রপ্তানি খাত বড় ধরনের সঙ্কটে পড়বে।
এদিকে শ্রমিক অধিকার ও কারখানার কর্মপরিবেশের নিরাপত্তা নিয়ে আগামী ৮ জুলাই ইইউর ট্রেড কমিশনার কারেল ডি গুটের সভাপতিত্বে জেনেভায় একটি বৈঠক হবে, যেখানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা, যুক্তরাষ্ট্র সরকার, বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশি পোশাকের ক্রেতা ও বিক্রেতারা অংশ নেবেন।
ইইউর বিবৃতিতে বলা হয়, সাভারের রানা প্লাজা ধসে ১১৩০ জনের মৃত্যুর পর কারেল ডি গুট গত ২৮ মে পররাষ্ট্র দীপু মনির সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা দুজনেই একমত হন যে, পরিস্থিতির উন্নয়নে ক্রেতা থেকে বিক্রেতা পর্যন্ত পুরো সরবরাহ চক্রের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সমন্বিত সহযোগিতা ও উদ্যোগ প্রয়োজন।
শ্রমিক অধিকার ও কারখানার নিরাপদ কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার মধ্যস্ততায় সরকার-শ্রমিক-মালিক ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর হয়। আইএলও ২০১৪ সাল পর্যন্ত এ ব্যাপারে বাংলাদেশের উন্নতি পর্যবেক্ষণ করবে এবং ইইউ বিষয়টি নজরে রাখবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়।