“কিন্তু আমরা ভয় পাচ্ছি, আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের প্রভাব ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডাসহ অন্যান্য প্রধান বাজারে না পড়ে। ওরা যদি তাদের (যুক্তরাষ্ট্র) অনুসরণ করে, তাহলে আমাদের রপ্তানি মহা সঙ্কটে পড়বে।”
সাম্প্রতিক সময়ে তাজরীন ফ্যাশনসে অগ্নিকাণ্ড ও রানা প্লাজা ধসে ১২ শ’র বেশি শ্রমিক নিহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে কারখানার কর্ম পরিবেশের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার-সুবিধা (জিএসপি) স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত কয়েক মাসের শুনানির পর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত ২টার দিকে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি মাইকেল ফ্রোম্যান এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
জেনারেলাইজড সিস্টেম অব প্রিফারেন্সেসের (জিএসপি) আওতায় বাংলাদেশ পাঁচ হাজার ধরনের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধায় রপ্তানি করতে পারত, যদিও এর মধ্যে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক নেই।
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা গতবছর জিএসপির আওতায় তিন কোটি ৪৭ লাখ ডলারের তামাক, ক্রীড়া সরঞ্জাম, চিনামাটির তৈজসপত্র ও প্লাস্টিক সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি করেছেন, যাতে তারা শুল্ক ছাড় পেয়েছেন ২০ লাখ ডলারের মতো। আর ৪৯০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে শুল্ক বাবদে দিয়েছেন ৭৩ কোটি ডলার।
আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি দামের পোশাক কেনে, যা বাংলাদেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬০ শতাংশ।
তারপরও দেশের স্বার্থের বিষয়টি বিবেচনায় রেখে ব্যবসা চালানোর জন্য গার্মেন্ট মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
তিনি বলেন, “আমি দেশের ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারকদের অনুরোধ করব, তাদের কোনো কজে যেন দেশের বৃহৎ কোনো ক্ষতি না হয়, সে বিষয়টি মাথায় রেখে যেন তারা কাজ করেন।
তবে পোশাক খাতের একজন ব্যবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের বিষয়টি কেবল বাণিজ্য সংশ্লিষ্ট নয় বলেই তিনি মনে করেন।
শ্রমিক নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যার প্রতিকার না হওয়া, গ্রামীণ ব্যাংক ও মুহাম্মদ ইউনূস প্রসঙ্গে ও রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চাপ ছিল উল্লেখ করে এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, “সব বিষয় মাথায় নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের সিদ্ধান্ত দিয়েছে।”