মঈনুল হক চৌধুরী
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম প্রতিবেদক
ঢাকা, এপ্রিল ৫ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যা অনুপাতে মেয়রের সর্বোচ্চ নির্বাচনী ব্যয় ৫০ লাখ টাকা এবং কাউন্সিলরদের সর্বোচ্চ নির্বাচনী ব্যয় ৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করে অভিন্ন বিধিমালা অনুমোদন করেছে সরকার।
সোমবার আইন মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) নির্বাচন বিধিমালা, আচরণ বিধিমালা ও ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বিধিমালা অনুমোদন করে।
নির্বাচন কমিশন সচিব মুহম্মদ হুমায়ুন কবির বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সোমবার আইন মন্ত্রণালয় অভিন্ন সিটি করপোরেশন বিধিমালাগুলোর অনুমোদন দিয়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে এ সংক্রান্ত বিধিমালার গেজেট জারি করা সম্ভব হবে।"
এর একদিন আগে রোববার প্রধান নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদা বলেছেন, স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরশেন) বিধিমালা ১৫ এপ্রিলের মধ্যে হাতে পেলে ১৬-১৮ এপ্রিলের দিকে ঢাকা সিটি করপোরেশন (ডিসিসি) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। সীমানা পুননির্ধারণ চলতে থাকবে, নির্বাচনও হবে।
মে মাসের শেষের দিকে এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা জানান তিনি।
সরকার বিধিমালা অনুমোদনের পর তফসিল ঘোষণার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "বিধিমালার গেজেট তো করতে হবে। দেখি, আগামীকাল তো আমরা বসবো। তারপর এ বিষয়ে বলা যাবে।"
নির্বাচনী ব্যয় বেশি নির্ধারণের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন বলছে, সব সিটি করপোরেশনে ভোটার সংখ্যার তারতম্য রয়েছে। এ অসামঞ্জস্যত দূর করতেই এলাকার ভোটার অনুপাতে নির্বাচনী ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারি সচিব আব্দুল বাতেন জানান, নির্বাচন কমিশন যেভাবে বিধিমালারগুলোর খসড়া পাঠিয়েছিল, স্থানীয় সরকার ও আইন মন্ত্রণালয় পর্যালোচনা করে তা অনুমোদন করেছে। কোনো ধরনের হেরফের হয় নি।
সিটি করপোরেশন বিধিমালা অনুযায়ী, আগামী ডিসিসি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৫০ লাখ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থীরা সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা নির্বাচনী ব্যয়ের সুযোগ পাবেন।
ছবিসহ ভোটার তালিকায় হালনাগাদেও ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে এখন ভোটার ৩৭ লাখের বেশি। এছাড়া চট্টগ্রামে ১০ লাখের বেশি, রাজশাহীতে ২ লাখ ৫৭ হাজার, খুলনায় ৩ লাখ ৯৮ হাজার, বরিশালে ১ লাখ ৭৭ হাজার এবং সিলেটে ২ লাখ ৫৪ হাজার ভোটার রয়েছে।
২০০৭ সালের ২৪ মে ডিসিসি নির্বাচনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। আর চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি) নির্বাচনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হবে ২০১০ সালের ৯ মে।
২০০৮ সালের ৪ আগস্ট চার সিটি করপোরেশন- খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহীর নির্বাচন সম্পন্ন হয়।
মেয়ররের নির্বাচনী ব্যয়:
ইসির বিধিমালা অনুযায়ী, মেয়রদের নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ৫ লাখ ভোটারের জন্য ১৫ লাখ টাকা, ৫ লাখ একজন থেকে ১০ লাখ ভোটারের জন্য ২০ লাখ টাকা, ১০ লাখ একজন থেকে ২০ লাখ ভোটারের জন্য ৩০ লাখ টাকা এবং ২০ লাখের বেশি ভোটার এলাকার জন্য ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একই সঙ্গে মেয়রদের ব্যক্তিগত ব্যয় সর্বোচ্চ ৫ লাখ ভোটারের জন্য ৭৫ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ১০ লাখ ভোটারের জন্য ১ লাখ টাকা, সর্বোচ্চ ২০ লাখ ভোটারের জন্য দেড় লাখ টাকা এবং ২০ লাখের বেশি ভোটার এলাকার জন্য ২ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাউন্সিলরদের ব্যয়:
কাউন্সিলরদের নির্বাচনী ব্যয় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ভোটারের জন্য ১ লাখ টাকা, সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ভোটারের জন্য ২ লাখ টাকা, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ভোটারের জন্য ৪ লাখ টাকা এবং ৫০ হাজারের বেশি ভোটার এলাকার জন্য ৬ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
কাউন্সিলরদের ব্যক্তিগত ব্যয় সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ভোটারের জন্য ১০ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ভোটারের জন্য ২০ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ৫০ হাজার ভোটারের জন্য ৩০ হাজার টাকা এবং ৫০ হাজারের বেশি ভোটার এলাকার জন্য ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।
জামানত:
জামানতের টাকার অঙ্কও আনুপাতিক হারে নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বোচ্চ ৫ লাখ ভোটারের জন্য ২০ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ১০ লাখ ভোটারের জন্য ৩০ হাজার টাকা, সর্বোচ্চ ২০ লাখ ভোটারের জন্য ৫০ হাজার টাকা এবং ২০ লাখের বেশি ভোটারের জন্য ১ লাখ টাকা জামানত নির্ধারণ করা হয়।
তবে এবার আগের মতো জামানতের টাকা নগদ গ্রহণ করা হবে না। টাকার অঙ্ক বেশি হওয়ায় ব্যাংক ড্রাফট অথবা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জামানতের টাকা জমা দিতে হবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রথমদিকে সবক'টি সিটি করপোরেশনে মেয়র প্রার্থীরা ৫ লাখ টাকা এবং ওয়ার্ড কমিশনাররা ২ লাখ টাকা করে ব্যয় করার বিধান ছিল।
নবম সংসদ নির্বাচনেও আগের চেয়ে তিনগুণ বেশি নির্বাচনী ব্যয়ের সুযোগ পায় প্রার্থীরা।
সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে আচরণবিধি করা হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ রয়েছে আগের মতোই। মেয়ররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার স্লি