নতুন করে সংস্কারে পুরনো চেহারাই ‘ফিরে পাবে’ অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসের প্রহর গুণতে থাকা সাড়ে তিনশ বছরের পুরনো ঢাকা গেইট।
Published : 20 Jul 2022, 11:41 PM
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে খুব শিগগিরই শুরু হবে ঐতিহাসিক এই মোগল স্থাপনাটিকে নতুন করে পুরনো আদল দেওয়ার কাজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেটের পশ্চিম অংশটি পড়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ভবনের পাশে। যদিও এখন সেখানে মেট্রো রেলের কার্যক্রমই চোখে পড়ে।
উত্তরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিন নেতার সমাধির প্রবেশ পথের অংশ। দক্ষিণে পড়েছে দোয়েল চত্বর।
গেটের সংস্কার কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে জানতে চাইলে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম জানান, ঐতিহ্য সংরক্ষণে দ্রুতই এর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এটার ড্রইং ও ডিজাইনের কাজ কমপ্লিট, প্ল্যানিং ও নকশাও আমাদের প্রকৌশলে বাস্তবায়নের জন্য দেব। টেন্ডার হয়ে যাবে শিঘ্রই।
“ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে আমরা আদি আদলে এই গেইটটি নির্মাণ করব। ঐতিহ্য ধরে রেখে ডিজাইনটা যেন উপভোগ্য হয় সেটাই আমরা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি।”
মোগল সম্রাট আওরঙ্গজেবের শাসনামলে বাংলার সুবাদার (মোগল সাম্রাজ্যের বিভিন্ন প্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক) ছিলেন মীর জুমলা।
বুড়িগঙ্গা নদী হয়ে ঢাকায় প্রবেশে ব্যবহার হতো এ তোরণ। সে সময় এর নাম ছিল ‘মীর জুমলার গেইট’। পরে কখনও ‘ময়মনসিংহ গেইট’, কখনও ‘ঢাকা গেইট’ এবং অনেক পরে নাম হয় ‘রমনা গেইট’।
রমনায় প্রবেশের জন্য ব্যবহার করা হতো বলে সাধারণ মানুষের কাছে রমনা গেইট নামেই পরিচিতি পায়।
ঐতিহাসিক এই গেইটটির সংস্কার নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানান, পুরাতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নিয়ে এর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও ধারণ করতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যে কার্যক্রম গ্রহণ করেছে তারই আলোকে ঐতিহাসিক ঢাকা ফটক সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।”
পত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু সাঈদের সহযোগিতায় সপ্তদশ শতকের সেই ‘ঢাকা ফটক’ ফিরিয়ে আনা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “নিজস্ব অর্থায়নেই আমরা ঢাকা ফটক সংস্কারের কার্যক্রম আরম্ভ করব।”
ঢাকা গেটের সংস্কার কাজের নকশা তৈরির সঙ্গে যুক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু সাঈদ জানান, সংস্কার কাজের মাধ্যমে এর আগের রুপটি ধরে রাখা হবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নকশা হয়ে গেছে, আগামী সপ্তাহে টেন্ডার হয়ে যাবে। গেইটটা তৈরি করতে দেড় থেকে দুই মাস লাগবে বলে আমরা আশা করছি।
তবে প্রকল্পে ছয় মাস সময় নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগে যেমন ছিল তেমনি করা হবে, সে ক্ষেত্রে লোকজন যেন যাওয়ার সময় হারিয়ে যাওয়া সেই ঐতিহ্য দেখতে পায়। সেটা আমরা সংরক্ষণ করছি।”
নতুন নাম ‘ঢাকা গেইট’ না ‘ঢাকা ফটক’ সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এটা আমরা এখনও ঠিক করিনি, তবে আগে কাজটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি।”
আরও খবর