তবে বুয়েটে বড় সন্তানকে পাঠিয়ে অকালে হারানোর পর ছোট সন্তানকে পড়তে দেবেন কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আছেন মো. বরকত উল্লাহ।
আবরার ফাহাদ ছিলেন বুয়েটের তড়িৎ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০১৯ সালে বুয়েট ছাত্রলীগের এক দল নেতা-কর্মী হলের মধ্যে তাকে পিটিয়ে হত্যা করে।
ওই ঘটনায় দেশজুড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে আদালতের রায়ে ২০ আসামির মৃত্যুদণ্ড হয়েছে, যাবজ্জীবন দণ্ড হয়েছে ৫ জনের। গত বছরই আদালতের রায় হয়।
আবরার নিহত হওয়ার সময় ফাইয়াজ ঢাকা কলেজে একাদশ শ্রেণীতে পড়তেন। ভাইকে হারানোর পর নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়ে কুষ্টিয়া কলেজে ভর্তি হন তিনি।
এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর তিনি এবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ( বুয়েট) ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।
বৃহস্পতিবার রাতে ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, পরীক্ষায় ৪৫০তম হয়ে যন্ত্র কৌশল বিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য বিবেচিত হয়েছেন ফাইয়াজ।
এরপর তার বাবা বরকত উল্লাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাত ৯টার দিকে রেজাল্ট জানতে পারলাম। বুয়েটের কথা শুনলে বুকটা কেঁপে ওঠে।
“ছোট ছেলেকে ওখানে ভর্তি করাব কি না, এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি। ইতোমধ্যে তাকে গাজীপুরের আইইউটিতে ভর্তি করা হয়েছে। তারপরও আমরা চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নেব, বুয়েটে ভর্তি করাব কি না?”
বুয়েটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়ে খুশি ফাইয়াজ; যদিও ভর্তি হওয়ার বিষয়ে এখনও নিশ্চিত নন তিনি।
ফাইয়াজ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইইউটিতে ভর্তি আছি। এখন পর্যন্ত কোথায় পড়ব, সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে বুয়েটে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি পরীক্ষা দিয়েছি, ওটা ফল এখনও বাকি।
“ভর্তি কার্যক্রম ঈদের আগে হচ্ছে না। ১০-১৫ দিন সময় পাচ্ছি। এই সময়ে ভেবে দেখি। পরিবারের সাথেও আলাপ করে দেখি। এরপর সিদ্ধান্ত নেব।”
এবার বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন নটরডেম কলেজের শিক্ষার্থী আসীর আনজুম খান। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন আবির আহমেদ হোসাইন। তৃতীয় স্থান পেয়েছেন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজের শিক্ষার্থী রেজোয়ান রাহী রাদ।
দুই ধাপের এই ভর্তি পরীক্ষা গত ৪ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রাক-নির্বাচনী (প্রাথমিক বাছাই) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ১৭ হাজার ৩৩ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন।
গত ১১ জনু প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার ফল প্রকাশ করে মেধাক্রম অনুযায়ী ৬ হাজার শিক্ষার্থী চূড়ান্ত পর্বের ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়।
গত ১৮ জুন সকাল ও বিকাল দুই পর্বে তিন হাজার করে শিক্ষার্থী চূড়ান্ত ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। চূড়ান্ত পর্বে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তদের মেধাক্রম অনুযায়ী প্রকৌশল, পুরকৌশল, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল এবং স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ সমূহের অধীনে ১২টি বিভাগের ১ হাজার ২৭৯ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
ভর্তি পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তদের তাদের ফলাফলের সঙ্গে বিভাগও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।