অশ্রুচোখে ন্যায়বিচার চাইলেন আবরারের বাবা

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে তার বাবা বরকত উল্লাহর জবানবন্দি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2020, 12:27 PM
Updated : 5 Oct 2020, 12:27 PM

সোমবার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিজের জবানবন্দি দিতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন আবরারের বাবা, যিনি এ মামলার বাদী।

তিনি বলেন, “আসামিরা আমার ছেলে আবরার ফাহাদ রাব্বীকে ছয় ঘণ্টা ধরে অমানবিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমি এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই।”

বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে জবানবন্দি দেন বরকত উল্লাহ। পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা শুরু করেন।

আসামি রবিন ও জেমির পক্ষে আইনজীবী আমিনুল গণী টিটো, অনীক সরকারের পক্ষে আইনজীবী মাহবুব আহমেদ, মুজাহিদের পক্ষে আইনজীবী গাজী জিল্লুর রহমান, মাজেদুল ইসলামের পক্ষে আইনজীবী রেজাউল ইসলাম সরকার জেরা করেন বাদীকে।

আবরার ফাহাদ

কখন কীভাবে কার কাছ থেকে তিনি আবরারের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন, কখন চকবাজার থানায় যান, কখন তিনি লাশ দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছান- এসব বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে উত্তর দেন বরকত উল্লাহ।

আগামী দুই দিনও এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা একনাগারে চলবে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষে নিয়োজিত বিশেষ কৌঁসুলি এহসানুল হক সমাজী।

গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর কথা থাকলেও আবরারের বাবার অসুস্থতার কারণে তা পিছিয়ে যায়।

বুয়েটের শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে গত ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।

পরদিন ৭ অক্টোবর তার বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে যে অভিযোগপত্র জমা দেন, সেখানে আসামি করা হয় মোট ২৫ জনকে।

ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২৫ আসামির সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন।

মামলার আসামিরাও সবাই বুয়েটের বিভিন্ন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ২২ জন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। বাকি তিনজনকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচার চলবে।