আলোচিত মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি।
গত বছরের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরে বাংলা হলে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয় ওই হলের শিক্ষার্থী তড়িৎ কৌশলের ছাত্র আবরারকে।
জবানবন্দিতে জনি বলেন, “তাকে রাত ১টায় হল ক্যান্টিন থেকে (২০১১ নম্বর কক্ষে) ডেকে নিয়ে বমি করা বিছানার চাদর-বালিশ পরিষ্কার করানো হয়। বলে যে সকালে আমাকে বখসিস দেওয়া হবে।”
এরপর রাত ৪টায় ঘুম থেকে জেগে ওই বিছানার চাদরে মোড়ানো আবরারের লাশ দেখতে পাওয়ার কথা জানান জনি। তখন পুলিশও ছিল।
আবরারের লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ বলেছিল, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আবরারকে ডেকে নেওয়া হয়েছিল বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা অমিত সাহার কক্ষে। পরে শিক্ষার্থীরা রাত ২টার দিকে হলের দ্বিতীয়তলার সিঁড়িতে তার লাশ পায়। ততক্ষণে হল প্রশাসনের কর্মকর্তারা পুলিশকে খবর দেয়।
আবরার হত্যাকাণ্ডের পর তার বাবা বরকত উল্লাহ কুষ্টিয়া থেকে এসে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তাতে ১৯ জনকে আসামি করেছিলেন তিনি। পরে পুলিশ তদন্ত করে ২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। আসামিরা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী।
২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর গত ৫ অক্টোবর সোমবার আলোচিত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
বৃহস্পতিবার জনি ছাড়াও সাক্ষ্য দেন চকবাজার থানার তৎকালীন ওসি এবং মামলাটির রেকর্ডিং কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সোহরাব হোসেন।
জবানবন্দিতে তিনি বলেন, আসামির তালিকায় ১৯ জনের নাম-ঠিকানাসহ তিনি এজাহার নিয়েছিলেন।
জবানবন্দি দেওয়ার পর দুই সাক্ষীকেই জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
এরপর বিচারক রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।
এনিয়ে ৬০ জন সাক্ষীর মধ্যে আবরারের বাবাসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল।
আসামিদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৭ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন। এদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
মামলার তিন আসামি এখনও পলাতক। তারা হলেন- মোর্শেদুজ্জামান জিসান, এহতেশামুল রাব্বি তানিম ও মোস্তবা রাফিদ। তাদের মধ্যে প্রথম দু’জন এজাহারভুক্ত ও শেষের জন এজাহারবহির্ভূত আসামি।