ঈদুল আজহা উপলক্ষে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা এবং শিল্পাঞ্চলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ১০টি ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ১২টিসহ সারা দেশে ৪ হাজার ৪০৭টি পশুর হাট বসবে। সংখ্যা হয়তো দু'একটা বেশি-কম হতে পারে।”
এসময় মহাসড়ক ও সড়কে কোনো পশুর হাট বসনো যাবে না জানিয়ে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, “পশুর হাটে মাস্ক পরে ঢুকতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।”
এর আগে করোনাভাইরাইসের সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় সরকার ‘কিছুটা চিন্তিত’ বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের এ বিষয়ে প্রস্তুতি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, হাটগুলোতে প্রয়োজন অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে। পশুর হাটের টাকা পুলিশের সহযোগিতায় বহন করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা।
তিনি বলেন, “এ বছর ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করে বাইনোকুলার ও সিসিক্যামেরার মাধ্যমে সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, পকেটমারসহ অন্যান্য দুষ্কৃতকারীদের যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
আসাদুজ্জামান জানান, বাস, লঞ্চ, ট্রেন ও ফেরিঘাট ছাড়াও পদ্মা সেতুর দুইপাড়ে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত করতে সারাদেশে হাইওয়ে পুলিশের ১০৯টি টহল দল, ৮৪টি কুইক রেসপন্স দলসহ ওয়াচ টাওয়ার, রেকার ও অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, “ঈদের ছুটিতে মহানগর, জেলা, উপজেলায় হাটবাজারে চুরি- ডাকাতি, ছিনতাই, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ প্রতিরোধে পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হবে।
“কোনো পশুবাহী নৌযান বা ট্রাক জোরপূর্বক কোনো নির্দিষ্ট স্থানে বা হাটে যেতে বাধ্য করা যাবে না।”
এবার সারাদেশে ৪৫ হাজার মাঠে বা ময়দানে এবং ৫০ হাজারের মত মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে বলে সাংবাদিকদের জানান আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, “জামাতে অংশগ্রহণকারী মুসল্লিদের মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং সরকারের জারি করা স্বাস্থ্য নির্দেশিকা পালন করতে হবে।”
ঈদের আগেই পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য এ শিল্পের মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে বলা হয়েছে এবং তারা সরকারকে আশ্বস্ত করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “পোশাক শ্রমিকদের ছুটি পার্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। তবে কোন তারিখ থেকে ছুটি দেওয়া হবে তা নির্ধারণ করা হয়নি।”
তবে পোশাক কারখানার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা ৮ ও ৯ জুলাই খোলা থাকবে এবং চাঁদ দেখা সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ঘোষণায় জানিয়ে দেবে।
ঈদে যেকোনো নাশকতা প্রতিরোধে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পাশাপাশি গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে বলে জানান আসাদুজ্জামান খাঁন।
“কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যাতে গুজব বা উস্কানি দিয়ে শিল্প এলাকায় কোনো নাশকতা করতে না পারে সেজন্য গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। কাঁচা চামড়া বিদেশ যাতে পাচার না হতে পারে সেদিকেও নজরদারি থাকবে।”
ঈদে কোনো নাশকতার আশঙ্কা আছে কি না, জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “এখন পর্যন্ত ঈদে নাশকতার আশঙ্কার খবর আসেনি। না আসলেও গোয়েন্দারা সজাগ থাকবে।”