তেঁতুল তলা মাঠ শিশুদের খেলার জন্য রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্বস্তি বোধ করছেন এই মাঠ রক্ষার আন্দোলনে নেমে পুলিশি হয়রানিতে পড়া সৈয়দা রত্না।
Published : 28 Apr 2022, 05:27 PM
তবে স্থানটি পুলিশের কর্তৃত্বে থাকায় অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন এই সংস্কৃতিকর্মী। তার শঙ্কা, পুলিশ ভবিষ্যতে আবার হয়ত মাঠটি নিয়ে অন্য কিছু ভাবতে পারে।
ঢাকার কলাবাগানে আবাসিক এলাকার মধ্যে এক বিঘা জমির তেঁতুল তলা মাঠ গত এক সপ্তাহ ধরে সারাদেশে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় সৈয়দা রত্নার আটক হওয়ার পর।
স্থানীয় শিশু-কিশোরদের খেলার এবং বড়দের নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের সরকারি এই জমিটি পুলিশ বরাদ্দ নিয়ে কলাবাগান থানা ভবনের জন্য নির্মাণ কাজ শুরু করলে উদীচীর কর্মী রত্না এলাকাবাসীকে নিয়ে নামেন আন্দোলনে।
গত রোববার পুলিশ ওই মাঠে প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করলে রত্না তার তরুণ ছেলেকে নিয়ে সেখানে গিয়ে ফেইসবুক লাইভ শুরু করলে তাদের ধরে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। অনলাইনে-অফলাইনে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে ১৩ ঘণ্টা পর মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় তাদের।
এরপর পুলিশের পক্ষ থেকে সেখানে থানা ভবন নির্মাণের পক্ষে যুক্তি দেখানো হলেও বিশিষ্টজনসহ অনেকের বিরোধিতার প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তেঁতুল তলা এলাকার শিশুদের খেলার জন্য রাখার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে রত্না বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিষয়টি ভালোভাবেই দেখছি। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দেওয়ায় এখন আর ভয় নেই।
“এই মাঠটিকে সদ্ব্যব্যহার করতে চাই বাচ্চাদের জন্য। বাচ্চারা যেন সত্যিকারের সাংস্কৃতিক, উদার মনোভাব নিয়ে বড় হতে পারে। ওদের বিকাশ যেন সঠিকভাবে হয়। এভাবেই যেন ব্যবহার করতে পারি।”
“আমি প্রথম থেকে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি। আমি প্রথম থেকেই জানি, এটি প্রধানমন্ত্রীর কানে গেলে এক সেকেন্ডও দেরি হবে না,” বলেন তিনি।
মাঠটি শিশুদের খেলার জন্য থাকলেও মালিকানা পুলিশের হাতেই থাকবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন। তাতে আপত্তি রয়েছে রত্নার।
তিনি বলেন, “পুলিশ আবার কোনো কিছু করার চেষ্টা করবে। মাঠটিকে আমরা চাই একবারে মাঠ হিসাবে যেভাবে সরকারি মাঠ হিসাবে, স্বতন্ত্র মাঠ হিসাবে ঘোষণা হোক। যেভাবে থাকলে- কেউ কখনও মাঠটিকে অন্য কোনো বিকল্প ভাববার চিন্তা করবেন না। এভাবে যেন হয়- আর কখনও এই মাঠে হামলা না হয়, এই নিরাপত্তাটুকু আমরা চাই।”
রত্নাকে পুলিশের আটক করে থানায় নিয়ে রাখার বৈধতা নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন তুলেছেন আইনজীবী ও পরিবেশবাদীরা। এর মধ্যে পুলিশ মাঠের চার পাশে দেওয়ালও তুলে ফেলেছে।
তবে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর শিশুরা মাঠের ভেতর গিয়ে খেলাধুলা করছে জানিয়ে রত্না বলেন, ভেতরে কয়েকজন পুলিশ সদস্য থাকলেও খেলাধুলায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।