টিপু হত্যা: অস্ত্রসহ একজন গ্রেপ্তার

রাজধানীর শাহজাহানপুরের রাস্তায় প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপুসহ দুইজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে অস্ত্রসহ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 April 2022, 07:15 AM
Updated : 1 April 2022, 08:54 AM

আরফান উল্লাহ দামাল নামের ওই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার রাজধানীর কমলাপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার রিফাত রহমান শামীম জানান।

দামালের কাছে একটি রিভলবার পাওয়া গেছে জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “টিপু হত্যার পরিকল্পনার সময় সে ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আমরা এখন অস্ত্র মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাচ্ছি, রিমান্ডে নেওয়ার পর টিপু হত্যার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা জানার চেষ্টা করা হবে।”

ঢাকার শাহজাহানপুরের আমতলী এলাকার রাস্তায় ২৪ মার্চ রাতে অস্ত্রধারীর গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু (৫৪)। তার মাইক্রোবাসের পাশে দাঁড়িয়ে গুলি ছোড়ে হেলমেটধারী আততায়ী।

ওই সময় গাড়ির কাছেই রিকশায় থাকা বদরুন্নেছা সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী সামিয়া আফনান প্রীতিও গুলিতে নিহত হন। আহত হন টিপুর গাড়ি চালক মুন্না।

মাত্র মিনিটখানেকের মধ্যে কাজ সেরে হামলাকারী সড়ক বিভাজক টপকে গুলি করতে করতে রাস্তার অন্য পাশে অপেক্ষায় থাকা একটি মোটরসাইকেলে উঠে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি শাহজাহানপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

টিপু প্রায় এক দশক আগে যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কী হত্যা মামলার আসামি ছিলেন। ৪-৫দিন আগে ফোনে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করেছেন তার স্ত্রী।

হত্যাকাণ্ডের তিন দিনের মাথায় ২৭ মার্চ বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মাদ আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় গোয়েন্দা পুলিশ।

গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হাফিজ আকতার সে সময় এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আকাশই ‘মূল খুনি’। টিপুকে হত্যার জন্য তাকে ভাড়া করা হয়েছিল। হত্যাকাণ্ডের পর তিনি জয়পুরহাট পালিয়ে যান এবং সীমান্ত পার হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু যেতে না পেরে বগুড়া আসেন এবং সেখানে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।  

পুলিশ বলছে, টিপুকে হত্যা কথা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ‘স্বীকার করেছেন’ আকাশ। সেদিন মোটরসইকেলসহ আকাশের আরেক সঙ্গীর নাম জানলেও ‘তদন্তের স্বার্থে’ তা প্রকাশ করা হয়নি।

আকাশকে কে ভাড়া করেছিল, কত টাকায় ভাড়া করেছিল, হত্যার মোটিভ কী- সেসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সেদিন দেননি হাফিজ আকতার। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রটিও পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শুধু বলেছিলেন, “শুধু টাকার বিনিময়ে এই হত্যাকাণ্ড নয়, সুবিধা পাইয়ে দেওয়া বা মাথার ওপর ঝুলে থাকা মামলা থেকে ছাড় পাওয়াও খুন করার শর্ত হিসেবে থাকতে পারে। এক্ষেত্রে চার/পাঁচটি সম্ভাবনা ধরে তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।”

আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে পাওয়ার পর আকাশকে এখন জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

পুরনো খবর