ঢাকার ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় আত্মসমর্পণ করা সাফায়েত জামিলকে এক দিনের পুলিশ রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
Published : 09 Feb 2021, 01:07 PM
ঢাকার মহানগর হাকিম নিভানা খায়ের জেসী মঙ্গলবার সাফায়েত জামিলের ১৬৪ ধারার জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন নাকচ করে এই আদেশ দেন।
জামিলের আইনজীবী খায়রুল ইসলাম লিটন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঘটনায় তিনি নিজে সম্পৃক্ত ছিলেন না। সে কথাই তিনি হাকিমকে জানাতে চেয়েছিলেন । তিনি নিজেকে ঘটনার বাইরে রেখে এই জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন।”
অন্যদিকে গত বৃহস্পতিবার জামিল আদালতে আত্মসমর্পণ করলে মামলার তদন্ত কমকর্তা মোহাম্মসদপুর থানার এস আই সাজেদুল হক তাকে জিজ্ঞসাবাদের জন্য সাত দিন হেফাজতে চেয়েছিলেন।
মঙ্গলবার এ বিষয়ে শুনানিতে আইনজীবী লিটন আদালতে বলেন, “ধর্ষণের কোনো কথা তিনি (জামিল) জানেন না। সে কারণে তাতে সম্পৃক্ততা বা সহযোগিতার প্রশ্নও ওঠে না।”
ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১ ফেব্রুয়ারি ইউল্যাবের শিক্ষার্থী ওই তরুণীর মৃত্যু হলে তার বাবা মোহাম্মদপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করেন।
সেখানে ওই তরুণীকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়, আসামি করা হয় তারই পাঁচ বন্ধুকে।
সাফায়েত জামিল ছাড়া অপর আসামিরা হলেন- মর্তুজা রায়হান চৌধুরী (২২), নুহাত আলম তাফসীর (২১), ফারজানা জামান নেহা ও আরাফাত।
তাদের মধ্যে আরাফাত ওই তরুণীর মৃত্যুর আগের দিনই ঢাকার অন্য একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। বাকিরা গ্রেপ্তার হয়েছেন বা আত্মসমর্পণ করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ইউল্যাবের শিক্ষার্থী ওই তরুণী গত ২৮ জানুয়ারি তার চার বন্ধুর সঙ্গে উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় যান এবং সেখানে তারা মদ পান করেন।
নেহা ও তার সঙ্গে থাকা ছেলে বন্ধু প্রথমে চলে যান। পরে ওই তরুণী, রায়হান ও আরাফাত একসঙ্গে বের হন। আরাফাত গুলশানে নেমে গিয়ে সেখান থেকে মাওয়ায় গিয়ে আরেকটি পার্টিতে যোগ দেন।
ওই তরুণীকে নিয়ে রাতে মোহাম্মদপুরে তাদের আরেক বন্ধু নুহাতের বাসায় উঠেন রায়হান। নুহাত তাদের আড্ডায় ছিলেন না।
সেখানে ওই তরুণী বেশ কয়েক বার বমি করে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই বাসায় সেই তরুণীকে রায়হান ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।
একদিন পর ওই তরুণীকে ইবনে সিনা হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পরে তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আরাফাতও অসুস্থ পড়ে পড়ে আরেকটি হাসপাতালে মারা গেছেন।
মামলার প্রধান আসামি মুর্তজা রায়হান চৌধুরী গত শুক্রবার ঢাকার হাকিম আদালতে জবানবন্দি দেন। রিমান্ড শেষে নুহাতকে শনিবার কারাগারে পাঠানো হয়। আর নেহাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।