মোহাম্মদপুরের ধর্ষণ মামলা: সেই তরুণীর আরেক বন্ধুর মৃত্যু

ঢাকার মোহাম্মদপুরে বন্ধুর বাড়ি থেকে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর এক বন্ধুও অন্য এক হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ওই তরুণীর মৃত্যুর ঘটনায় ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হলেও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বলছেন, তেমন কোনো আলামত তিনি পাননি।

তবে ‘অতিরিক্ত মদপানে’ ওই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা জানতে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সেলিম রেজা।

সোমবার ওই তরুণীর ময়নাতদন্তের পর সেলিম রেজা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বলপ্রয়োগ বা ধর্ষণের কোনো আলামত মেলেনি। তবে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সেখানেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”

আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে ওই তরুণীর মৃত্যু হয়। একই ঘটনায় তার আগের দিন তার বন্ধু আরাফাতের মৃত্যু হয় সিটি হাসপাতালে, তবে সে খবর পুলিশ পায় পরে। 

ওই তরুণীর বাবা মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগ এনে রোববার তার মেয়ের পাঁচ বন্ধুর বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।

পরে পুলিশ ওই তরুণীর দুই বন্ধু মর্তুজা রায়হান চৌধুরী ও নুহাদ আলম তাফসীরকে গ্রেপ্তার করে। রোববারই তাদের আদালতে পাঠিয়ে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।

মোহাম্মদপুর থানার ওসি মো. আব্দুল লতিফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মৃত ও গ্রেপ্তার সবাই ইউল্যাব ও অক্সফোর্ড ইন্টান্যাশনাল স্কুলের শিক্ষার্থী। তারা পাঁচজন গত শুক্রবার উত্তরার একটি রেস্তোরাঁয় যায়।

“সেখানে তারা মদ পান করে। তাদের মধ্যে একটি মেয়ে এবং তার বন্ধু আগেই চলে যায়। পরে এক পর্যায়ে ওই তরুণী অসুস্থ বোধ করেন। তখন আরাফাতকে গুলশানে নামিয়ে দিয়ে ওই তরুণীকে নিয়ে মোহাম্মদপুরে তাদের বন্ধুর তাফসিরের বাসায় যান রায়হান।” 

ওই বাসা থেকেই মেয়েটিকে শনিবার সকালে প্রথমে ইবনে সিনা হাসপাতাল এবং পরে আনোয়ার খান মডার্নে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার দুপুরে তার মৃত্যু হয়।

এদিকে আরাফাতও অসুস্থ হয়ে শুক্রবার সিটি হাসপাতালে মারা যান, পুলিশ সেই খবর জানতে পারে সোমবার।

ওসি বলেন, “আরাফাতকে কোথায় দাফন করা হয়েছে আমরা এখনও জানতে পারিনি, এ বিষয়ে খোঁজ খবর চলছে।”

মামলার এজাহারে ওই তরুণীর বাবা অভিযোগ করেছেন, তার মেয়েকে তাফসীরের বাসায় নিয়ে ‘ধর্ষণ করে’ তার ছেলেবন্ধু রায়হান।

এ বিষয়ে ওসি মো. আব্দুল লতিফ বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান বলেছে, মদপান করে ওই বাসায় যাওয়ার পর ওই তরুণীর সঙ্গে তার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল।”