জলাবদ্ধতা নিরসনে দীর্ঘ তিন দশক পর ঢাকায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে দুই সিটি করপোরেশনের হাতে গেল।
Published : 31 Dec 2020, 02:41 PM
বৃহস্পতিবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এ বিষয়ে দুই সিটি করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে ওয়াসা।
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমান উল্লাহ নুরী এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা এই সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
সামান্য বৃষ্টি হলেই ঢাকার বিভিন্ন সড়ক জলাবদ্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। ঢাকায় ওয়াসা এবং সিটি করপোরেশন-দুই সংস্থারই নিষ্কাশন নালা রয়েছে। এ কারণে নিষ্কাশনে ব্যবস্থায় সমন্বয়ের অভাব থাকার অভিযোগ পুরোনো। এ অবস্থায় পানি নিষ্কাশনের দায়িত্ব ওয়াসার কাছ থেকে দু্ই সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের।
তিনি বলেন, রাজধানীতে বে-দখল হওয়া সকল খাল দুই সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সমন্বিত উদ্যোগে উদ্ধার করা হবে।
ঢাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থা পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নে দ্রুত কাজ শুরু করতে মেয়রদের প্রতি আহবান জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ঢাকাকে আধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন করতে হলে বেদখল হয়ে যাওয়া এবং হারিয়ে যাওয়া খালগুলোকে উদ্ধার, সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। খালকেন্দ্রিক উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প তৈরি করছে।
“খাল দখল করে রাস্তা না বানিয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করার সুযোগ ছিল, কিন্তু তা করা হয়নি। এজন্য নগরীর সকল খাল সংস্কার করে একটির সাথে একটি সংযোগ দিয়ে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট চালু করা, দুই পাশে ওয়াকওয়ে ও সাইকেল লেইন নির্মাণসহ অন্যান্য নাগরিক সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে।”
স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হেলালুদ্দিন আহমেদের সভাপতিতে এ অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসও উপস্থিত ছিলেন ।
খাল ও বক্স কালভার্ট পরিষ্কারে আগামী শনিবার থেকে ‘ক্র্যাশ প্রোগ্রাম’ শুরু করবেন জানিয়ে দক্ষিণের মেয়র তাপস বলেন, সেদিন জিরানি খাল, মাণ্ডা খাল, শ্যামপুর খাল, পান্থপথ বক্স কালভার্ট এবং সেগুন বাগিচা বক্স কালভার্ট থেকে ময়লা অপসারণ করা হবে।
“নতুন বছরের প্রথম দিন শুক্রবার, এ কারণে তার পরদিন শনিবার থেকেই আমরা কাজ শুরু করব। এসব জায়গায় দীর্র্ঘদিনের স্তূপকৃত বর্জ্য যা শক্ত হয়ে গেছে। আগামী মার্চের মধ্যে এই তিন খাল ও দুটি বক্স কালভার্ট থেকে বর্জ্য অপসারণ কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি।”
উত্তরের খালগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে বলে এ বছর বৃষ্টি হলেও তেমন জলাবদ্ধতা হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।
“বৃষ্টির কয়েক ঘণ্টা পরও রাস্তা থেকে পানি নামত না। তাই নিজ উদ্যোগে ডিএনসিসির অধীনে থাকা সবগুলো খাল পরিষ্কার করছি। তাই চলতি বছর নগরে জলাবদ্ধতা হবে না। এসব খালের সৌন্দর্য বাড়াতে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।”