পুলিশ সদস্যদের কাঁধে বা হাতে ভারী বন্দুক বহনের দিন ফুরালো; ট্যাকটিক্যাল বেল্ট পরে বিজয় দিবসের দায়িত্ব পালনে মাঠে নেমেছেন তারা।
Published : 16 Dec 2020, 02:02 PM
কোমরের বেল্টের সঙ্গে যুক্ত হোলস্টার রয়েছে উরুতে বাঁধা; তাতে রয়েছে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র, হ্যান্ড কাফ, ওয়ারলেস, পানির বোতলও রয়েছে বেল্টে।
প্রথমে ঢাকা মহানগর পুলিশের সাত হাজার ও চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের তিন হাজার পুলিশ সদস্যকে এই বেল্ট দেওয়া হবে বলে মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ জানিয়েছেন।
মাঠ পর্যায়ে কাজ করার সময় পুলিশ সদস্যদের হাত খালি রাখতে উন্নত বিশ্বের আদলে এই ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে বলে জানান আইজিপি।
বুধবার শাহবাগ ও রমনা এলাকায় ঘুরে ট্যাকটিক্যাল বেল্ট পরা অবস্থায় পুলিশ সদস্যদের কর্তব্য পালন করতে দেখা যায়।
মৎস্য ভবনের সামনে কর্তব্যরত এএসআই নাজমুল ওই বেল্ট পরে ছিলেন, সঙ্গে আরও তিন পুলিশ সদস্য। সবার পরনে ট্যাকটিক্যাল বেল্ট।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে নাজমুল বলেন, এখন হাতমুক্ত, এতে স্বস্তিবোধ করছি। লম্বা অস্ত্র বহনের ঝামেলা নেই।
রমনা বিভাগের পুলিশের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান বলেন, “ট্যাকটিক্যাল বেল্ট অ্যান্ড অ্যাকসেসরিজের মধ্যে রয়েছে থাই হোলেস্টার উইথ আর্মস, এক্সপান্ডেবল ব্যাটন, হ্যান্ড কাফ, ওয়ারলেস, টর্চ লাইট, ওয়াটার বটল, মাইক্রোফোন।”
এখনো সেটের সঙ্গে মাইক্রোফোন সেট করা হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, তার বিভাগের ১২২ জন পুলিশ সদস্য এই বেল্ট পরে দায়িত্ব পালন করছেন।
“দুটি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার স্থান রয়েছে। একটিতে পিস্তল রাখা হবে এবং আরেকটিতে এসএমজি রাখা হবে।”
তবে বর্তমানে যারা দায়িত্ব পালন করছেন তারা একটি আগ্নেয়াস্ত্র বহন করছেন।
ঢাকা মহানগর থেকে জানানো হয়, এই বেল্ট পরে সার্জেন্টরাও ডিউটি করছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের ১৩৫ জন এসআই, ১৭১ জন এএসআই ও ৬৭ জন পুলিশ সদস্য এই বেল্ট পরে কাজ করছেন।
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, কনস্টেবলরাও এই বেল্ট পরে ডিউটি দিচ্ছেন।
বুধবার সংবাদ সম্মলনে জানানো হয়, পুলিশ সদস্যদের কর্মদক্ষতা ও অপারেশনাল সক্ষমতা বাড়িয়ে দায়িত্ব পালনের সময় হাত খালি রাখা, রুটিন দায়িত্ব পালনের সময় ভারি ও বহনে কষ্টকর লম্বা অস্ত্রের পরিবর্তে হালকা ও সহজে বহনযোগ্য ছোট অস্ত্র ব্যবহার করা, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতে বেশি হতাহতের ঘটনা এড়াতে লম্বা ব্যারেলের অস্ত্রের ব্যবহার ধারাবাহিকভাবে কমিয়ে আনাই এর উদ্দেশ্য।
তাছাড়া দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন সহজ ও আরামদায়ক করা, ঔপনিবেশিক উত্তরাধিকার ধারা থেকে বেরিয়ে আসা, বিশ্বের অন্যান্য আধুনিক দেশের মত বাংলাদেশ পুলিশকে গড়ে তোলা এবং পুলিশ ও জনগণের মধ্যে মানসিক দূরত্ব কমিয়ে এনে পুলিশি সেবাকে আরও সহজ করতে এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
লম্বা অস্ত্রের ব্যবহার কি আর থাকবে না জানতে চাইলে শাহবাগ থানার পরিদর্শক তদন্ত আরিফুর রহমান সরদার বলেন, “আজ ছয়টি পার্টি ডিউটি দিচ্ছেন। শাহবাগ মোড়, মৎস্য ভবনের সামনে, প্রেসক্লাব, মেডিকেল ও বিশ্ববিদ্যালয় তারা কাজ করছেন ওই বেল্ট পরে। এছাড়া থানায় যারা ডিউটি দিচ্ছেন তারা তো লম্বা অস্ত্র নিয়ে কাজ করবে।”
৩০ ডিসেম্বর পরীক্ষামুলকভাবে এ কার্যক্রম চলবে জানিয়ে এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পর্যায়ক্রমে তা সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে।