জেকেজি দুর্নীতির মামলায় কনস্টেবলের সাক্ষ্য

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে জেকেজি হেলথ কেয়ারের প্রতারণার মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল রফিকুল ইসলাম।

আদালত প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Sept 2020, 02:37 PM
Updated : 17 Sept 2020, 02:37 PM

বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারীর আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি। তাকে নিয়ে আলোচিত মামলাটিতে চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হল।

রফিকুল সাক্ষ্যে বলেন, আসামি জেকেজির সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরুর বাসায় এবং জেকেজি অফিস থেকে যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়, তার জব্দ তালিকায় তিনি স্বাক্ষর করেন।

জবানবন্দি দেওয়ার পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাকে জেরা করেন।

রফিকুলের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।

দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে আবেদন করে পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের দায়িত্ব নিয়েছিল ওভাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথকেয়ার।

কিন্তু জুনের শেষ দিকে অভিযোগ আসে, সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি নিয়ে বুকিং বিডি ও হেলথকেয়ার নামে দুটি সাইটের মাধ্যমে টাকা নিচ্ছিল জেকেজি। নমুনা পরীক্ষা না করে রোগীদের ভুয়া সনদও তারা দিচ্ছিল।

রাজধানীর কল্যাণপুরের কামাল হোসেন নামে এক ব্যক্তির অভিযোগের সত্যতা পেয়ে গত ২২ জুন জেকেজি হেলথ কেয়ারের সাবেক গ্রাফিক ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরে তাদের কম্পিউটার থেকে চারজন প্রবাসীরসহ ৪৩ জনের নামে তৈরি করা করোনাভাইরাস পরীক্ষার ভুয়া সনদ পাওয়া যায়।

পরদিন কামাল হোসেন বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করেন ওই দুইজনের বিরুদ্ধে। সরকারি নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ, কাজে অবহেলার মাধ্যমে জীবন বিপন্নকারী রোগের সংক্রামণ বিস্তারের ঝুঁকি তৈরি, করোনাভাইরাসের সনদ জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয় সেখানে।

হুমায়ুন ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরে তেজগাঁও থানা পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুল চৌধুরী, তার বোন জেবুন্নেছাসহ সাতজনকে গ্রেপ্তার করে।

পরে ১২ জুলাই আরিফুলের স্ত্রী জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটের চিকিৎসক ডা. সাবরিনা আরিফকেও গ্রেপ্তার করা হয়। সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজির সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

প্রায় দেড় মাস তদন্ত শেষে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী গত ১৩ অগাস্ট অভিযোগপত্র দেয় আট আসামির বিরুদ্ধে। এরপর ২০ অগাস্ট অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়।

আসামিরা হলেন- জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরী, তার স্ত্রী সাবরিনা আরিফ, আরিফুলের বোন জেবুন্নেছা রিমা, জেকেজির সাবেক কর্মচারী হুমায়ুন কবির হিমু ও তার স্ত্রী তানজিলা পাটোয়ারী, জেকেজির কোঅর্ডিনেটর আবু সাঈদ চৌধুরী, জেকেজির কর্মচারী বিপুল দাস ও শফিকুল ইসলাম রোমিও। আটজনই কারাগারে আছেন।