বিচার শুরুর চার বছর পরে ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।
Published : 25 Aug 2020, 02:18 PM
মঙ্গলবার মামলার রেকর্ডিং কর্মকর্তা (আরও) তৎকালীন তেজগাঁও থানার ওসি (বতর্মানে লালবাগ জোনের সহকারী কমিশনার) মো. সালাহউদ্দিনের বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে ২৪ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়। মামলার অভিযোগপত্রে রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষী ছিলেন ৪০ জন ।
পরে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ রবিউল আলম আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আসামিদের আসামিপক্ষের সাক্ষ্য ও আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন রাখেন।
ঘটনার কিছুদিন পরেই মামলার বাদী আশিকুরের ভগ্নিপতি মো. মনির হোসেন মাসুদ জীবিকার প্রয়োজনে সৌদি আরবে চলে যাওয়ায় বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তাকে আদালতে হাজির কর যায়নি। ফলে নিয়মানুযায়ী মামলার রেকর্ডিং কর্মকর্তা সালাহউদ্দিন মামলার এজাহারে বাদীর স্বাক্ষর শনাক্ত করেন।
ওসি সালাহউদ্দিনের হাতেই এজাহারটি করা হয়েছিল বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান এ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর সালাহউদ্দিন হাওলাদার ।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, জবানবন্দী শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মাদ ও আব্দুর রশীদ মোল্লা ওসি সালাহউদ্দিনকে জেরা করেন।
মামলার আসামিদের মধ্যে জিকরুল্লাহ ওরফে হাসান, আরিফুল ইসলাম ওরফে মুশফিক ওরফে এরফান, সাইফুল ইসলাম ওরফে মানসুরকে মঙ্গলবার কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়।
অন্যদিকে পলাতক দুই আসামি জুনেদ ওরফে জুনায়েদ আহমেদ ওরফে তাহের এবং আকরাম হোসেন ওরফে হাসিব ওরফে আব্দুল্লাহর পক্ষে মামলা পরিচালনায় রয়েছেন রাষ্ট্র নিয়োজিত আইনজীবী।
২০১৫ সালের ৩০ মার্চ ঢাকার তেজগাঁওয়ে নিজের বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের চাপাতির আঘাতে খুন হন ওয়াশিকুর, যিনি ফেইসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে ধর্মীয় গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লিখতেন।
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের বেগুনবাড়িতে এই হত্যাকাণ্ডের পরপরই জনতা ধাওয়া করে মাদ্রাসাছাত্র জিকরুল্লাহ ও আরিফুলকে ধরে ফেলে। আর সাইফুলকে হত্যাকাণ্ডের কয়েক দিন আগেই ধারালো অস্ত্রসহ যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে হত্যা পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখায় পুলিশ। সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
ঘটনার পরদিন চারজনকে আসামি করে তেঁজগাও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা করেন ওয়াশিকুরের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ। পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশকে।
২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর গোয়েন্দা পুলিশ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচ সদস্যকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। সেখানে বলা হয়, পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ হত্যার পুরো বিষয়টি পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের কাজ করছিলেন।
২৭ বছর বয়সী ওয়াশিকুর তেজগাঁও কলেজ থেকে লেখাপড়া শেষ করে মতিঝিলের ফারইস্ট এভিয়েশন নামের একটি ট্র্যাভেল এজেন্সিতে প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছিলেন। তার বাবার নাম টিপু সুলতান, বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার হাজীপুর গ্রামে।
সামহোয়্যারইন ব্লগে ‘বোকা মানব’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট থাকলেও ওয়াশিকুর মূলত লেখালেখি করতেন ফেইসবুকের কয়েকটি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে।