ঢাকার পান্থপথে ওয়ালটনের টিভি, রেফ্রিজেরেটর ডাকাতির ঘটনায় জড়িত অভিযোগে মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, উদ্ধার করা হয়েছে লুণ্ঠিত বেশিরভাগ মালামাল।
Published : 05 Jul 2020, 08:16 PM
গত ২৩ জুন রাত ১২টায় পান্থপথে ওয়ালটনের (এসটি) বিক্রয় কেন্দ্রের সামনে থেকে ৫টি এলইডি টিভি এবং ২৪টি রেফ্রিজেরেটরবোঝাই পিকআপটি ভ্যান ডাকাতি হয়।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার হারুন অর রশিদ রোববার শেরে বাংলা নগর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘটনায় জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার এবং ১৮টি রেফ্রিজেরেটর ও ৩টি টিভি উদ্ধারের কথা জানান।
উপকমিশনার হারুন বলেন, সেদিন ওয়ালটন প্লাজা থেকে ৫টি এলইডি টিভি এবং ২৪টি ফ্রিজ একটি পিকআপে উঠানো হয়েছিল কিশোরগঞ্জে ওয়ালটনের ডিলারের কাছে পৌঁছানোর জন্য।
“রাত ১২টার দিকে চালক আনোয়ার এবং হেলপার মিরাজকে মালামাল বুঝে দিয়ে ওয়ালটনের কর্মচারীরা চলে যাওয়ার পর হঠাৎ করে একটি খালি পিকআপ তাদের কাছে আসে এবং ৭/৮জন নামে। তারা মালামাল বোঝাই পিকআপটি চাপাতি, চাকুর ভয় দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং আনোয়ার ও মিরাজের চোখ, হাত বেঁধে খালি পিকআপে উঠায়।
“পরে সারারাত ধরে বিভিন্নস্থানে মালামাল নামানোর পর পিকআপটি খালি হলে আনোয়ার ও মিরাজকে রেখে দুর্বৃত্তরা চলে যায়।”
এই ঘটনায় মামলা হলে বিভিন্ন সিসি ফুটেজ সংগ্রহ করে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ১ জুলাই রবিউল আলম (৩১) নামে একজনকে ঢাকার বছিলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ৭টি রেফ্রিজেরেটর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
পরে ময়মনসিংহে মেহেদী হাসান মৃধা (২৮) এবং মো. রনি (২৫) নামে দুজনের বাসা থেকে ২টি রেফ্রিজেরেটর, দুটি টিভি উদ্ধার করা হয় বলে উপকমিশনার হারুন জানান।
তিনি বলেন, এই দুইজন ছাড়াও মো. শাহজাহান (২৮) আব্দুর রহিম (২৮) নামে আরও দুজন বর্তমানে ভিন্ন একটি মামলায় ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এদিকে রবিউলের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতির রানা (২৮), সুমন (২৭) ও সাথী বেগম (২৫) নামে তিনজনকে গত ৪ জুলাই গ্রেপ্তার করে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ।
তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সাভার, আশুলিয়া, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন বাসা এবং দোকান থেকে নয়টি রেফ্রিজেরেটর এবং ১টি টিভি উদ্ধার করা হয় বলে উপকমিশনার হারুন জানান।
এই ডাকাতিতে অন্তত ১০ জন জড়িত ছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, এরা বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিল। কারাগারে থাকা অবস্থায় এই ধরনের ডাকাতির পরিকল্পনা আঁটে।
ময়মনসিংহে গ্রেপ্তার চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন।
ওযালটন প্লাজার ম্যানেজার রানা মিয়া ঘটনার পরপরই মামলা করেন। পুলিশ তৎপরতায়ও সন্তোষ জানান তিনি।
তবে তিনি বলেন, প্রতিদিন রাতেই মালামাল এভাবে উঠানামা হয়। ডাকাতরা আরও সুযোগ নিতে পারে। এজন্য পুলিশের টহল বাড়ানো দরকার।
দুই আসামি রিমান্ডে
ওয়ালটনের মালামাল ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তার সুমন ও রানাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছেন ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী।
রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলা নগর থানার এসআই সুমন চন্দ্র শীল মোট তিন আসামিকে আদালতে হাজির করেছিলেন।
সুমন ও রানাকে হেফাজতে এবং সাথীকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তিনি। তার আবেদনে সায় দিয়ে সাথীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
গ্রেপ্তার আরেক আসামি রবিউল ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।