পুরান ঢাকার ওয়ারীর ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলো শনিবার সকাল ৬টা থেকে অবরুদ্ধ হচ্ছে।
Published : 30 Jun 2020, 06:51 PM
টানা ২১ দিন এই ‘লকড ডাউন’ অবস্থা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
ওয়ারীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের টিপু সুলতান রোড, জাহাঙ্গীর রোড, ঢাকা-সিলেট হাইওয়ে (জয়কালী মন্দির থেকে বলধা গার্ডেন) আউটার রোড এবং ইনার রোড হিসেবে লারমিনি স্ট্রিট, হরি স্ট্রিট, ওয়ারি স্ট্রিট, র্যানকিন স্ট্রিট এবং নওয়াব স্ট্রিট ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
দুই মাস সারাদেশ লকডাউনের পর এখন করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো অবরুদ্ধ করার কৌশল নিয়েছে সরকার। ঢাকায় পূর্ব রাজাবাজারের পর দ্বিতীয় এলাকা হিসেবে অবরুদ্ধ করা হচ্ছে ওয়ারীকে।
মঙ্গলবার বিকালে কোভিড -১৯ নিয়ন্ত্রণে জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়ন বিষয়ক কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র তাপস ওয়ারী লকডাউনের দিনক্ষণ জানান।
তিনি বলেন, “এই এলাকার লকডাউন বাস্তবায়ন সঠিকভাবে করতে ২১ দিন সময় নিচ্ছি। আগামী ৪ঠা জুলাই শনিবার থেকে শুরু ২৫শে জুলাই ২১ দিন আমরা এই লকডাউনটি বাস্তবায়ন করব।”
এই সময়ে ওয়ারীর দুটি সড়ক ছাড়া বাকি সড়কের মুখ বন্ধ থাকবে বলে জানান মেয়র।
“দুটি সড়কে যাতায়াতে সুবিধা থাকবে, আর বাকি সড়কের মুখগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। সার্বিকভাবে সকল কিছু বন্ধ থাকবে। শুধু জরুরী ওষুধ যেন প্রয়োজনে নিতে পারে, সেজন্য ফার্মেসি খোলা থাকবে। এছাড়া খাদ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির জন্য ই-কমার্স এসোসিয়েশনসহ অন্যান্য মাধ্যমকে সংযুক্ত করে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সরবরাহ করা হবে।”
ওয়ারীতে যেসব রোগী শনাক্ত হয়েছে, তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি। এজন্য সিটি করেপোরেশনের মহানগর হাসপাতালে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করা হবে।
তাপস জানান, ওই এলাকায় ৪৬ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। আরও রোগী থাকতে পারে।
রাজাবাজারের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আইইডিসিআর ও সিভিল সার্জন অফিস সার্বক্ষণিক তদারকি করবে। সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ প্রশাসন থেকে ২৪ ঘণ্টা লকডাউন বাস্তবায়ন করবে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো কাউন্সিলরের নেতৃত্বে ওয়ার্ড ভিত্তিক কাজ করবে।
হত দরিদ্রদের জন্য ত্রাণসহ অন্যান্য সহায়তা থাকবে বলে জানান তিনি।
তিন দিন সময় নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তাপস বলেন, “মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়নের সঙ্গে অনেকগুলো সংস্থা জড়িত, তাদেরকে সম্পৃক্ত করে লকডাউন বাস্তবায়ন করতেই তিন দিন সময় লাগছে। সম্পূর্ণ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ যেন করতে পারি, সেই লক্ষ্যেই আমরা এগোচ্ছি।”
ওয়ারীতে ছুটি ৪-২৫ জুলাই
পুরান ঢাকার ওয়ারীর ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় আগামী ৪ থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার রাতে এই ছুটি ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে।
সেখানে বলা হয়েছে, লাল অঞ্চল ঘোষিত এলাকায় বসবাসরত সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বয়ত্তশাসিত, সংবিধবদ্ধ ও বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এ ছুটি প্রযোজ্য হবে।
~লাল অঞ্চল ঘোষিত এলাকায় অবস্থিত সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বয়ত্তশাসিত, সংবিধবদ্ধ ও বেসরকারি অফিস, প্রতিষ্ঠান ও সংস্থায় কর্মরত ও অন্য এলাকায় বসবাসরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও এ ছুটি প্রযোজ্য হবে।”
জরুরি পরিষেবা এ সাধারণ ছুটির আওতা বহির্ভূত থাকবে।