পিলখানা হত্যা মামলায় খালাস পাওয়া এবং সাজা খাটা শেষ হওয়া ২২ আসামির বিস্ফোরক মামলার জামিন আবেদন ভার্চুয়াল কোর্টে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন আসামিপক্ষের একজন আইনজীবী।
Published : 22 Jun 2020, 10:10 PM
আইনজীবী ফারুক আহাম্মাদ বলছেন, বিস্ফোরক আইনের এ মামলায় ২০১০ সালে আসমিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হলেও এখন পর্যন্ত বিচার শেষ হয়নি।
ফলে আসামিদের অনেকে হত্যা মামলা থেকে খালাস পেলেও অথবা সাজা খাটা শেষ করলেও বিস্ফোরক মামলায় জামিন না পাওয়ায় কারাগার থেকে বের হতে পারছেন না।
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে নিয়মিত আদালত কবে খুলবে সে নিশ্চয়তা যেহেতু নেই, সেহেতু ভার্চুয়াল কোর্টে জামিন শুনানির জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজের কাছে আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেখানে ‘সাড়া না পেয়ে’ এ বিষয়ে প্রধান বিচারপতির নির্দেশনা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রোরসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে তিনি ইমেইলে ওই চিঠির অনুলিপি পাঠিয়েছেন। এছাড়া ডাকযোগে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজনকে তিনি আবেদনের অনুলিপি পাঠাবেন।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিডিআরে বিদ্রোহ দেখা দেয়। সে বিদ্রোহে সে বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহী জওয়ানদের হাতে মারা যান ৫৭ সেনা কর্মকর্তা।
রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহে বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে জওয়ানদের বিদ্রোহ।
৫৭টি বিদ্রোহের মামলার বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। সেখানে ছয় হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড হয়।
আর ঢাকার জজ আদালতে ২০১৩ সালে হত্যা মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২৫৬ আসামিকে দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
হাই কোর্ট ২০১৭ সালে দেওয়া আপিলের রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে। ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ২২৮ জনকে তিন থেকে ১০ বছরের সাজা দেয়।
আইনজীবী ফারুক আহাম্মাদ জানান, হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে ২৭৮ জন জজ আদালতে খালাস পেয়েছেন। লঘুদণ্ড পাওয়া আসামিদের সাজা খাটাও শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু বিস্ফোরক মামলা আটকে থাকায় তাদের মুক্তি মিলছে না।
করোনাভাইরাস সঙ্কটের মধ্যে নিয়মিত আদালত বন্ধ থাকায় ভার্চুয়াল কোর্টে কেবল জরুরি বিষয়ের ওপর (জামিন ও নিষেধাজ্ঞা) শুনানি চলছে। সাক্ষ্যগ্রহণসহ বিচারের অন্য বিষয়গুলোর শুনানি বন্ধ রয়েছে।
এ অবস্থায় বিস্ফোরক মামলায় পিলখানার পাচক সেলিম মিয়া, পাচক আব্দুল করিম, পাচক শরীফুল ইসলাম, ঝাড়ুদার মো. আব্দুল বারী রুবেল, রাখাল বারেকুজ্জামান, ওয়ার্ড বয় আব্দুস সালামসহ ২২ জনের জামিন শুনানির জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজের কাছে ইমেইলে আবেদন করেছিলেন বলে জানান ফারুক আহাম্মাদ।
তিনি বলেন, “তাতে কোনো সাড়া না পাওয়ায় ওই আদালতের সাঁটলিপিকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। তিনি আমাকে বলেছেন, যেহেতু আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষে এজলাসে এ মামলার কার্যক্রম চলছে, সেহেতু ভার্চুয়াল শুনানি হবে না।”
সে কারণে নিয়মিত আদালত চালু হওয়ার আগে ভার্চুয়াল কোর্টে আসামিদের জামিন শুনানির নির্দেশনা চেয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছেন বলে জানান ফারুক।