দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে এখন কতগুলো ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) রয়েছে এবং সেগুলোর ব্যবস্থাপনা কীভাবে হয়ে থাকে, তা জানতে চেয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 08 Jun 2020, 06:15 PM
করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ অধিগ্রহণ ও অনলাইনে সেন্ট্রাল বেড ব্যুরো চালুর নির্দেশনা চেয়ে করা এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ এই তথ্য জানতে চায়।
সোমবার দেওয়া এই আদেশে বুধবারের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে তা জানাতে বলা হয়েছে।
দুই বছর আগে আরেকটি রিট আবেদনে একই প্রশ্ন রেখেছিল হাই কোর্ট। তখন উত্তরে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, দেশে (ওই সময়) ৭২টি আইসিইউ রয়েছে।
এর মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে সবচেয়ে বেশি ৩০টি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ১০টি।
দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর আবারও আলোচনায় আসে আইসিইউ, কেননা আক্রান্ত রোগীদের অবস্থার অবনতি ঘটলে তা প্রয়োজন হয়ে পড়ছে।
এর মধ্যেই বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউ অধিগ্রহণে গত রোববার রিট আবেদন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ডেপুটি রেজিস্ট্রার ডা. শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
পরিসংখ্যান ব্যুরো ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে রিট আবেদনকারীর আইনজীবী জানান, সারা দেশে এখন ১ হাজার ১৬৯টি আইসিইউ বেড আছে। তার মধ্যে সরকারি হাসাপাতালগুলোতে আছে ৪৩২টি। বাকিগুলো বেসরকারি হাসাপাতালগুলোতে।
আদালতে আবেদনটির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
ইয়াদিয়া জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “শুনানিতে বলেছি, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী, সরকার বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউগুলো অধিগ্রহণ করতে পারে। এছাড়া একটি ‘সেন্ট্রাল বেড ব্যুরো’ চালুর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছি।
“এটি থাকলে কোনো একজন রোগী কোনো একটি হাসপাতালে গিয়ে সেখানে যদি আইসিইউ খালি না থাকার কারণে বেড না পান, তাহলে ওই হাসপাতাল খোঁজ নিয়ে জানিয়ে দেবে, কোন কোন হাসপতালে আইসিইউ বেড খালি আছে। তখন রোগী সরাসরি আইসিইউ বেড খালি আছে, সরাসরি এমন হাসপাতালে চলে যেতে পারবে।”
এ আইনজীবী বলেন, “এখন আমরা যেটা দেখছি, সেটা হল কোভিড-১৯ পরীক্ষা না থাকার কারণে একজন রোগী চার-পাঁচটা হাসপাতাল ঘুরেও কোনো হাসপাতালে ভর্তি হতে পারছেন না বা আইসিইউ বেড পাচ্ছেন না। এটা তো একটা রোগীর জন্য চরম বিড়ম্বনা। খবরে আমরা দেখেছি, এভাবে কোনো কোনো রোগী রাস্তায় মারা যাচ্ছেন।”
শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের আইইডিসিআর বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হটলাইনে যোগাযোগ করে আইসিইউ বেডের বিষয়ে তথ্য পাওয়ার সুযোগ আছে।
পরে আদালত সারাদেশের আইসিইউর তথ্য জানানোর নির্দেশ দেয়। কতগুলো আছে, রোগীরা কীভাবে সেগুলো পেয়ে থাকে, আইসিইউ বেড পাওয়ার ক্ষেত্রে হটলাইন কীভাবে কাজ করে, আদৌ কাজ করে কি না, তা জানাতে বলা হয়।
অমিত তালুকদার বলেন, “সারাদেশের আইসিইউর সংখ্যা কত, সেগুলো কীভাবে ম্যানেজমেন্ট হয়, রোগীরা কীভাবে তা পায়, সে বিষয়েগুলো বুধবারের মধ্যে জানাব।”