দেশজুড়ে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এবার রোজার ঈদে চিরচেনা সেই পরিবেশ নেই রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনে।
Published : 25 May 2020, 11:07 AM
প্রতি বছর ঈদের দিন নানা শ্রেণিপেশার মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে বঙ্গভবন, তবে করোনাভাইরাস সঙ্কটে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন।
করোনাভাইরাস অতিমাত্রায় সংক্রামক বলে সব ধরনের অফিস-আদালত ও গণপরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে গত ২৬ মার্চ থেকে। এই সময় সবাইকে বাসায় থাকার, জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মসজিদে জামাতে নামাজ পড়ার ওপর দেওয়া কড়াকড়ি সম্প্রতি তুলে নেওয়া হলেও এবার রোজার ঈদের দিন ঈদগাহ বা খোলা জায়গার বদলে বাড়ির কাছে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে বলেছে সরকার।
সেইসঙ্গে মসজিদে ঈদ জামাত আয়োজনের ক্ষেত্রে সুরক্ষার ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বেশ কিছু শর্ত দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এমনিতে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতির ঈদ উদযাপন শুরু হয়। নামাজ শেষে বঙ্গভবনে ফিরে পরিবারের সদস্য এবং কর্মকর্তাদের সঙ্গে তিনি ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এবার পরিস্থিতি অন্যরকম থাকায় সকাল সাড়ে ৯টায় বঙ্গভবনের দরবার হলে পরিবারের সদস্য এবং ‘অতিপ্রয়োজনীয়’ কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের নামাজ পড়েন রাষ্ট্রপতি হামিদ।
মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য, রাজনীতিক, উচ্চ আদালতের বিচারপতি, শিক্ষাবিদ, কবি-সাহিত্যিক-শিল্পী, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন। অতিথিদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতি করমর্দনও করেন।
দরবার হলে হরেক পদের খাবারে অতিথিদের আপ্যায়ন করা হয়। শুভেচ্ছা বিনিময়ের ফাঁকে ঈদের শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রপতি। এক ফাঁকে দরকার হলে গিয়ে অতিথিদের খোঁজখবর নেন।
শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় মাইকে বাজতে থাকে বাঙালির ঈদ উদযাপনের চেনা সংগীত, ‘ও মন রমজানের ওই রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।’
বঙ্গভবনের এই আয়োজনের কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীরা সদস্যসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত থাকেন কয়েকশ’ কর্মী। সকলের পদচারণায় মুখর থাকে মূল ভবনের বাইরের প্রাঙ্গন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে এবার বঙ্গভবনে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক আয়োজন রাখা হয়নি। রাষ্ট্রপতি দরবার হলে ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। সেখানে তার পরিবারের সদস্য এবং অতিপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিরা অংশ নেন।”
সেখানে তিনি বলেন, “ঈদের আনন্দ করতে গিয়ে আমরা যেন এমন কিছু না করি যা নিজের ও অপরের জন্য বিপদ ডেকে আনতে পারে।”
প্রতি ঈদে ক্রেডেনশিয়াল হলে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষ হলে রাষ্ট্রপতি নিজের দপ্তরে গিয়ে আমন্ত্রিত অনেকের সঙ্গে গল্প করতেন। পরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাকি সময় কাটাতেন।
বঙ্গভবনের এক কর্মচারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রায় ২০ বছর ধরে বঙ্গভবনে চাকরি করি। সবসময় ঈদের সময় ডিউটি করি। এবারের মত খালি কখনও দেখিনি।”