বিদেশফেরতদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতের লক্ষ্যে বিমানবন্দরে তাদের সবার হাতে ‘হোম কোয়ারেন্টিন’-এর সিল লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
Published : 20 Mar 2020, 10:33 PM
বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সবাই বিদেশফেরত এবং তাদের সংস্পর্শে আসা লোকজন হওয়ায় সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ঘরে ফেরা প্রবাসীদের নিয়েই এখন দুশ্চিন্তা। তাদের দুই সপ্তাহ ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকতে নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না। শর্ত লংঘনের জন্য প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন জেলায় জেল-জরিমানার মতো ঘটনা ঘটছে।
তিনি শুক্রবার রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত রাত থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অনেক সময় অভিযোগ শোনা যায়, বিদেশ থেকে যারা আসেন নির্দেশনা থাকার পরও তারা ‘হোম কোয়ারেন্টিনে’ থাকছেন না। তাই ইমিগ্রেশন পুলিশ এই উদ্যোগ নিয়েছে।
“এই সিল কারও হাতে থাকলে বোঝা যাবে ওই ব্যক্তিকে কতদিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। তিনি ওই নিয়ম না মানলে অন্যান্যরা যেমন তাকে এড়িয়ে চলতে পারবেন আবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তাকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে পারবে।”
চীনের একটি শহর থেকে দেড় শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন দুই লাখের বেশি মানুষ। এই ভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজারের বেশি।
বাংলাদেশে প্রথম নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত ৮ মার্চ। এরপর ধাপে ধাপে বেড়ে শুক্রবার এই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ জনে। মৃত্যু হয়েছে একজন বৃদ্ধের, যিনি একজন ইতালিফেরতের সংস্পর্শে এসেছিলেন।
বিদেশফেরতদের জন্য নির্দেশনা
এদিকে বিদেশফেরত ব্যক্তিদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়ে একটি গণ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
>> করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্প্রতি বিদেশ ফেরত এবং তাদের সংস্পর্শে আসা সব ব্যক্তিকে এবং ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে আসা সবাইকে কর্তৃপক্ষের নজরদারিতে ১৪ দিন পর্যন্ত বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে ।
>> এক্ষেত্রে তাদের অবস্থান স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে জানাতে হবে।
>> কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তি ১৪ দিন ঘরের বাইরে বের হবেন না এবং নিজের বাড়িতে নির্ধারিত কক্ষে আবস্থান করবেন। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব তার সংস্পর্শে যাবেন না। এ ব্যাপারে জনসাধারণকেও সহায়তা করতে হবে।
>> কেউ নির্দেশনা লংঘন করলে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, অনুযায়ী তাদের জেল বা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে।
>> স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে এবং যার যার অবস্থান থেকে কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে সহায়তা করতে হবে।
>> আইইডিসিআর প্রয়োজনে সন্দেহজনক করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করবে।
>> করোনাভাইরাস বিষয়ক এবং সাধারণ সর্দি, কাশি ও জ্বরের চিকিৎসার জন্য ঘরের বসে হটলাইনে কল করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যাবে।
হটলাইন নম্বর: ১৬২৬৩, ৩৩৩ এবং ০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪, ০১৯২৭৭১১৭৮৫।