কৃষকের কাছ থেকে বেশি পরিমাণে কেনা ধান সংরক্ষণের জন্য গুদামের জায়গা খালি করতে ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রির সময় দুই মাস বাড়ানোর কথা ভাবছে সরকার।
Published : 30 Oct 2019, 02:21 PM
বুধবার সচিবালয়ে কৃষি প্রণোদনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক এ পরিকল্পনার কথা জানান।
কৃষকদের ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে নতুন কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “আমরা আসলে কোনা কর্মসূচি এখনো ঘোষণা করিনি, ধানের দামটা কত হবে এবং কীভাবে আরো বেশিসংখ্যক চাষীকে প্রণোদনা দিতে পারি… আগামীকাল মিটিং হবে।”
এবিষয়ে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন, একটি বুদ্ধি বের করে কীভাবে চাষীদের (ন্যায্য দাম) দেওয়া যায়। ধান বা চাল আমরা কিনলাম বেশি।”
বেশি ধান রাখার জন্য গুদামের চাল খালাসের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “একটা মোটামুটি ইঙ্গিত-কালকে সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত হবে- ১০ টাকা কেজি যে চাল আমরা দেই, এটার পরিমাণ বৃদ্ধি করে বেশি সংখ্যক মানুষকে আরো ২ মাস বেশি দিন দেওয়া হবে। এখন ৫ মাস দেওয়া হয়, আরো দুই মাস বাড়ানো হবে।”
‘খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির’ আওতায় ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে দেশের অতি দরিদ্র ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হচ্ছে।
সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর এবং মার্চ ও এপ্রিল এই পাঁচ মাসে একবার করে ৩০ কেজি চালের একটি বস্তা কার্ডধারী দরিদ্র পরিবারকে দেওয়া হয়। তবে প্রকৃত দরিদ্ররা না পাওয়াসহ এই চাল বিতরণ নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ আছে।
গ্রামের চৌকিদার বা গ্রাম্য পুলিশকেও ১০ টাকা কেজি চালের সহযোগিতা দেওয়া হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আগে বেশীরভাগ চাল কেনা হত আমরা যদি ১২ লাখ টন চাল কিনি, বেশী ধান কেনা যায় ৬ থেকে ৭ লাখ টন সেই প্রস্তুতি আমার নিচ্ছি যেটি আগামীকাল সিদ্ধান্ত হবে।”
এবছর বোরো মৌসুমে সরকার ১০ লাখ মেট্রিক টন সিদ্ধ চাল, দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং ২৬ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন বোরো ধান এবং ৫০ হাজার মেট্রিক টন গম কেনার সিদ্ধান্ত নেয়। ঠিক হয়, ২৫ এপ্রিল থেকে প্রতিকেজি ধান এবং প্রতি কেজি চাল ৩৬ টাকায় কিনবে সরকার।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের বাঁচাতে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে মন্ত্রণালয়কে বেশি ধান কেনার ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। পাশাপাশি চাল আমদানি নিরুৎসাহিত করতে শুল্ক বাড়ানো হয়।
পরে আরও আড়াই লাখ টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত হওয়ায় এবার সব মিলিয়ে মোট চার লাখ টন বোরো ধান কৃষকের কাছ থেকে কিনবে সরকার।
আরো বেশি ধান কিনতে মিলারদের সম্পৃক্ত করতে গুদামে ধান রাখার বিষয়ে পরিকল্পনার কথা জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “মিলারদের গুদামে আমরা ধান রাখলাম, তাদের গুদামে রাখার আলাদা খরচ দেব। একটি ম্যাকানিজম বের করছি কারণ আমাদের গুদামের স্বল্পতা রয়েছে, আমি বেশি কিনতে পারি না।
“কৃষকদের যন্ত্রপাতি সাবসিডিতে দেওয়া হবে। ডিএপি দাম কমানোর চিন্তা করা হচ্ছে- এসব প্রক্রিয়াধীন আছে।”