গ্রিনলাইন পরিবহনকে আদালতের কড়া আদেশ

গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসের চাপায় পা হারানো প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে আগামী ২২ মের মধ্যে ক্ষতিপূরণের বাকি অর্থ পরিশোধ করতে কড়া নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 May 2019, 11:16 AM
Updated : 15 May 2019, 11:18 AM

একটি রিট আবেদনে রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত; গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ ৫ লাখ টাকা দিয়ে বাকি অর্থ দিতে এক মাস সময় নিয়েছিল।

ওই সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও আর কোনো অর্থ এই বাস কোম্পানি পরিশোধ করেনি জানার পর বুধবার হাই কোর্ট কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে ২২ মে পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে ওই দিন পরবর্তী আদেশের জন্য মামলাটি রেখেছে।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাই কোর্ট বেঞ্চে মামলাটির শুনানি চলছে।

আদালতে গ্রিনলাইন পরিবহনের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অজি উল্লাহ। রিট আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন খোন্দকার শামসুল হক রেজা ও উম্মে কুলসুম স্মৃতি।

শামসুল হক বলেন, আদালতের আদেশের পর এককালীন ৫ লাখ টাকা ও চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা দিয়েছে গ্রিনলাইন। বাকি ৪৫ লাখ টাকা এক মাসের মধ্যে দেওয়ার কথা। কিন্তু আর কোনো টাকা দেয়নি।

এসময় গ্রিনলাইনের পক্ষে সময় আবেদন করলে তাদের আইনজীবী অজি উল্লাহকে জ্যেষ্ঠ বিচারক জিজ্ঞেস করেন,“টাকা দিয়েছেন?”

জবাবে অজি উল্লাহ বলেন, “চিকিৎসার জন্য খরচ দিচ্ছি।”

বিচারপতি বলেন, “বাকি টাকা (৪৫ লাখ) দিয়েছেন? কথা ছিল। এক মাসের মধ্যে বাকি টাকা দেবেন। টাকা তো দেননি। আর চিকিৎসার খরচ তো আলাদা ডাইরেকশন ছিল। সব চিকিৎসা খরচ দেবেন। টাকা দেননি কেন?”

অজি উল্লাহ তখন বলেন, “টাইম চেয়েছি।”

বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারক তখন বলেন, “একবার চাইলেন, সময় তো দিলাম। চার আনা পয়সাও পে না করে সময় চাইলেন! আপনাদের (গ্রিনলাইন) কি ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে? তা তো না। ব্যবসা চলছে। আমরা কি রিসিভার নিয়োগ দিয়ে দিব?

“একেবারে খালি হাতে চলে আসলেন। এটা কী করে হয়? সামনে কোর্টের ভ্যাকেশন আছে। তার আগে আদেশ বাস্তবায়ন করেন। তা না হলে কী করতে হয়, আমরা জানি। ২২ মে তারিখ রাখলাম।”

আদেশের পরে রিট আবেদনকারী আইনজীবী শামসুল হক সাংবাদিকদের বলেন, “তারা একটা হলফনামা দিয়ে বলেছি যে তাদের মালিক অসুস্থ। সে জন্য সময় দরকার।

“আমাদের বক্তব্য ছিল যেহেতু উনাদের ব্যবসা-বাণিজ্য চলছে, অতএব যে কোনো লোকের মাধ্যমে বা ম্যানেজারের মাধ্যমে চেক বা টাকা দিতে পারে। ওদের আইনজীবী সময় চেয়েছেন। এরপর আদালত ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় দিয়েছেন। ওই তারিখের মধ্যে বাকি টাকা পরিশোধ করবেন।”

গত বছরের ২৮ এপ্রিল যাত্রাবাড়ীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন পরিবহনের একটি বাস চাপা দেয় প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারকে। তাকে বাঁচাতে একটি পা কেটে ফেলতে বাধ্য হন চিকিৎসকরা।

রাসেল সরকারের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে সাবেক সাংসদ উম্মে কুলসুমের করা এক রিট আবেদনে চিকিৎসা খরচ বাদেও ৫০ লাখ টাকা দিতে গ্রিনলাইনকে নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। পরে আপিল বিভাগেও ওই আদেশ বহাল থাকে।

এরপর গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ৫ লাখ টাকা পরিশোধ করে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ। বাকি ৪৫ লাখ টাকা এক মাসের মধ্যে দিতে গ্রিনলাইনের মালিককে সময় দিয়েছিল আদালত।