ওই দুর্ঘটনার পর গত এক বছর ধরে রাসেলকে চলতে হচ্ছিল ক্র্যাচে ভর করে। সিআরপি চিকিৎসকরা বলছেন, রাসেলের এখন আর ক্র্যাচ লাগবে না। সপ্তাহ চারেকের মধ্যেই তিনি কৃত্রিম পায়ে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন।
সিআরপির কৃত্রিম অঙ্গ সংযোজন বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ শফিক জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বিনা খরচে তার এই কৃত্রিম পা সংযোজন করা হয়।
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার গাড়িচালক রাসেল পরিবার নিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন ভাল থাকার আশায়। আদাবরে একটি রেন্ট-এ-কার প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালানোর কাজ নিয়েছিলেন। এরই মধ্যে গত বছর ২৮ এপ্রিল ঢাকায় মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে গ্রিনলাইন বাসের চালকের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাসের চালক তার পায়ের ওপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে দেন। বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাসেলের একটি পা।
এরপর রাসেলকে পাড়ি দিতে হয়েছে অনেক পথ। অবশেষে কৃত্রিম পা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটার স্বপ্ন দেখছেন তিনি।
“সেই সঙ্গে আমার নিজের কাজের জায়গায় আবার ফিরে যেতে চাই, যদি আমাকে সেই সুযোগ দেওয়া হয়। সিআরপিতে এসে আমি নতুন জীবন খুঁজে পেয়েছি৷ তাই ধন্যবাদ সিআরপি ও এই সংস্থার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে।”
তবে কৃত্রিম পায়ে স্বাভাবিক চলার ছন্দ ফিরে পেতে রাসেলকে অপেক্ষা করতে হবে আরও সপ্তা চারেক। দৈনন্দিন কাজের বিষয়গুলো অনুশীলন করাবে সিআরপি।
চিকিৎসক শফিক বলেন, “রাসেলের জন্য আমরা আমাদের পক্ষ থেকে কিছু করার চেষ্টা করেছি। আমাদের এখানে যে ধরনের সুবিধা দেওয়া সম্ভব, তার সবই আমরা তাকে দেব।”
সিআরপির নির্বাহী পরিচালক শফিকুল ইসলাম ও ফিজিওথেরাপি বিভাগের ইনচার্জ ফারজানা শারমিন জানান, কৃত্রিম পা সংযোজনের ফলে রাসেল তার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। তার পাশে দাঁড়াতে পেরে তারাও আনন্দিত বলে জানান।
পা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দেশব্যাপী আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে রাসেলকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আদেশ দিয়েছে আদালত। গত ১০ এপ্রিল গ্রিন লাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষ রাসেলকে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করে। বাকি টাকা এক মাসের মধ্যে পরিশোধের আদেশ দেয় আদালত।