অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত হলেও পলাতক থাকায় চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকের সম্পত্তি ও মালামাল ক্রোকের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
Published : 05 May 2019, 09:06 PM
সেনাবাহিনীতে ব্যর্থ অভ্যুত্থানচেষ্টার পর পালিয়ে জঙ্গিনেতার খাতায় নাম লেখানো সৈয়দ জিয়াকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজলেও এখনও পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পলাতক জিয়া জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সামরিক শাখার প্রধান বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের দাবি। ২০১৬ সালে গুলশান হামলার পর তাকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা হয়েছিল।
চার বছর আগে জিয়ার নির্দেশেই জঙ্গিরা বইমেলার বাইরে লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করেছিল বলে এই হত্যামামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলাটির ছয় আসামির মধ্যে জিয়াসহ দুজন পলাতক। পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পর গত ১১ এপ্রিল ওই দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল।
রোববার একই আদালতের বিচারক মো. মজিবুর রহমান পলাতক জিয়াসহ দুই আসামির সম্পত্তি ও মালামাল ক্রোকের আদেশ দিয়েছে বলে ট্রাইবুনালের সেরেস্তা সহকারী (দাপ্তরিক কর্মকর্তা) রুহুল আমিন জানিয়েছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ক্রোকের এবং বিজ্ঞপ্তি প্রকাশে আইনে এক মাস সময় নির্ধারণ করা আছে। যে জন্য তারিখ এগোনো যায়নি। এ মামলার তারিখ দ্রুত পড়বে।”
বিচারক আগামী ১৩ জুন মামলার কার্যক্রমের পরবর্তী তারিখ রেখেছেন বলে জানান রুহুল।
পলাতক অন্য আসামি হলেন আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ওরফে হাসিবুল ওরফে আব্দুল্লাহ।
জিয়ার সঙ্গে তার সম্পত্তি ক্রোকেরও আদেশ হয়েছে।
২০১২ সালের ১৯ জানুয়ারি সেনাবাহিনী এক সংবাদ সম্মেলনে সরকার উৎখাতে ধর্মান্ধ কয়েকজন সেনা কর্মকর্তার একটি অভ্যুত্থান পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দেওয়ার খবর দেয়। অভ্যুত্থানচেষ্টাকারীদের নেতা হিসেবে আসে জিয়ার নাম। তবে তিনি পলাতক বলে জানানো হয়।
এরপর আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের নেতা হিসেবে জিয়ার নাম আসে পুলিশের কাছ থেকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ২০১৭ সালে বলেছিলেন, “জিয়ার প্রতি আমাদের নজরদারি রয়েছে। আমরা তাকে ফলো করছি। যে কোনো সময় হয়ত আমাদের নেটওয়ার্কে এসে পড়বে।”
এরপর দুই বছর গড়াতে চললেও জিয়ার হদিস মেলেনি।
এর মধ্যেই গত ১৩ মার্চ অভিজিৎ হত্যামামলায় জিয়াকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম।
বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় গত ২৫ মার্চ মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী।