ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উপ-নির্বাচনে নয় লাখ ভোটের মধ্যে একাই আট লাখ পেয়ে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের শপথ নিয়েছেন।
Published : 07 Mar 2019, 10:55 AM
ভোটের এক সপ্তাহের মাথায় বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার কার্যালয়ে নতুন মেয়রকে শপথ পড়ান।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শপথ বাক্য উচ্চারণ করে আতিকুল বলেন, “আমি ভীতি বা অ অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী এবং সততা, নিষ্ঠা ও বিশ্বস্ততার সহিত আমার পদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করিব।”
একই অনুষ্ঠানে ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির নতুন ওয়ার্ডগুলো থেকে নির্বাচিত ৫০ জন কাউন্সিলরকে শপথ পড়ান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
শপথ নেওয়া ৫০ জন নতুন কাউন্সিলরের মধ্যে উত্তরের ২৬ ও দক্ষিণের ২৪ জন। তাদের মধ্যে সংরক্ষিত আসনের ১২ জন নারী কাউন্সিলর রয়েছেন।
আনিসুল হকের মৃত্যুতে ঢাকা উত্তরের মেয়র পদ শূন্য হলে উপ নির্বাচনের আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। আদালতের স্থগিতাদেশ কাটিয়ে গত ২৮ ফ্রেব্রুয়ারি সেই নির্বাচন হয়।
সিটি করপোরেশনের ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯৯ ভোটের মধ্যে সেদিন বাক্সে পড়ে নয় লাখ ৪২ হাজার ৫৩৯ ভোট।
বৈধ ভোটের মধ্যে নৌকার প্রার্থী পোশাক ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম পান ৮ লাখ ৩৯ হাজার ৩০২ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির শাফিন আহমেদ ৫২ হাজার ৪২৯ ভোট পান।
বিএনপির বর্জনের মধ্যে মেয়র পদে উপনির্বাচনে কেন্দ্রগুলোতে সারা দিনই ভোটার উপস্থিতি ছিল কম। তবে ঘোষিত ফলাফলে ভোটের হার হয়েছে ৩১ দশমিক ০৫ শতাংশ।
২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল ঢাকা উত্তরে ভোট হওয়ার পর ১৪ মে প্রথম সভা হয়েছিল। সে হিসাবে এই উপনির্বাচনে নির্বাচিত মেয়র ২০২০ সালের ১৩ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালনের সুযোগ পাবেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা
মেয়র হিসেবে শপথ নেওয়ার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন আতিকুল ইসলাম।
নতুন কাউন্সিলরদের নিয়ে বেলা ১২টায় দিতে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে যান ঢাকা উত্তরের মেয়র।
সেখানে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আজ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। এই মহান দিনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ডিএনসিসির মেয়র হিসাবে আমি শপথ গ্রহণ করি।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছেন তিনি একটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঢাকা শহর দেখতে চান। আমরা যেভাবে নিজেদের ঘর সুন্দর করে গুছিয়ে রাখি, আমাদের ঘরের বাইরে আশেপাশের পরিবেশকেও যেন সেভাবে সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন রাখি।”
মেয়র হিসেবে সবাইকে নিয়ে কাজ করতে চান বলে জানান আতিক।
“আমি সকল কাউন্সিলর, রাজনীতিবিদ, খেটে খাওয়া মানুষসহ সমাজের সব স্তরের মানুষকে নিয়ে সবার জন্য কাজ করতে চাই। আমি সবার আগে দেখব, বুঝব, তারপর কাজ করব। লোক দেখানোর জন্য আমি কিছু করতে চাই না।”
পরে আতিক বনানী কবরস্থানে গিয়ে পঁচাত্তরের ১৫ অগাস্ট নিহত জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের কবর এবং জাতীয় তিন নেতার কবর জিয়ারত করেন।
এছাড়া নিজের বাবা-মা ও ডিএনসিসির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক ও প্যানেল মেয়র মো. ওসমান গনির কবর জিয়ারত করেন তিনি।