চুয়াডাঙ্গার ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষু শিবিরে অস্ত্রোপচারের পর সংক্রমণে চোখ হারানো ২০ জনের জন্য ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাই কোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়েছে।
Published : 01 Apr 2018, 02:36 PM
সুপ্রিম কোর্টের আইজীবী অমিত দাসগুপ্ত রোববার সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট আবেদন করেন। সেখানে ক্ষতিগ্রস্ত ২০ জনের প্রত্যেকের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি ওই চিকিৎসা কেন্দ্রে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে কার্যকর, উপযুক্ত ও নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও অস্ত্রেপচারকারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সেই মর্মে রুল চাওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, ডা. মোহাম্মদ শাহীনসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে এই রিট আবেদনে।
অমিত দাসগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাই কোর্ট বেঞ্চে এ রিটের শুনানি হতে পারে।
গত ২৯ মার্চ দৈনিক সমকালে প্রকাশিত ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে ওই আবেদনটি করা হয়েছে।
গত ৪ মার্চ থেকে চুয়াডাঙ্গার ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিনে ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি (ফ্যাকো) কাটা হয়। ওই অস্ত্রোপচারের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন।
সমকালের প্রতিবেদনে বলা হয়, পরদিন বাসায় ফেরার পর ওই রোগীদের চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়। চোখে জ্বালা-পোড়া নিয়ে তারা যোগাযোগ করেন ইমপ্যাক্ট হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে বিষয়টি গুরুত্ব না দিলেও পরে কয়েকজন রোগীকে স্থানীয় এক চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। ওই চক্ষু বিশেষজ্ঞ তাদের জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেন।
এদের মধ্যে চারজন রোগী নিজেদের উদ্যোগে স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় আসেন। পরে ইমপ্যাক্ট থেকে ১২ মার্চ একসঙ্গে ১৬ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়। কিন্তু ততদিনে দেরি হয়ে যাওয়ায় ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়।
আরেক নারীর অপারেশন করা বাম চোখের অবস্থাও ভালো নয়। ঢাকায় দ্বিতীয় দফায় অপারেশন করলেও দৃষ্টিশক্তি ফিরে আসেনি তার।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ২০ রোগীর সবাই দরিদ্র। কেউ স্বজনের কাছে ধারদেনা করে, কেউ বাড়ির ছাগল-মুরগি বিক্রি করে, কেউ এনজিও থেকে ক্ষুদ্রঋণ নিয়ে ইমপ্যাক্ট হাসপাতালে গিয়েছিলেন চোখ সারাতে।