মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের তিনটি ধারা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ১১টি দেশের কূটনীতিকরা।
Published : 25 Mar 2018, 06:53 PM
সচিবালয়ে রোববার আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠকে ১১টি দেশের রাষ্ট্রদূত ও তাদের প্রতিনিধিরা এই উদ্বেগ জানান।
সভা শেষে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, “তারা ডিজটাল নিরাপত্তা আইনের ২১, ২৫ ও ২৮ ধারা নিয়ে তাদের উদ্বেগ জানিয়েছেন। এই তিনটি ধারা নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।
“আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি, আমাদের পক্ষ থেকে বক্তব্য পেশ করেছি। এগুলো আমি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কাছে পৌঁছে দেব। আমরা তাদের বক্তব্যগুলো দেখব, বিবেচনা করব এবং কিছু দিনের মধ্যে আবার মিলিত হব।”
জার্মানির রাষ্ট্রদূত থমাস প্রিনজ সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা ১১টি দূতাবাস ও হাইকমিশনের কর্মকর্তারা খসড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে কথা বলতে এসেছিলাম। জনগণের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে খসড়া আইনের সেসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি।”
আনিসুল বলেন, “আলোচনার পর যদি আইনের পরিবর্তন কিংবা কোনো বিষয় আরও পরিষ্কার করার প্রয়োজন হয় তা আমরা করব। তবে যুক্তিযুক্ত সময়ের মধ্যে আমরা আবারও আলোচনায় বসব।”
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত রেন্সজে টিরিংক ছাড়াও সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, কানাডা, যুক্তরাজ্য, স্পেন, নরওয়ে, ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের প্রতিনিধিরা আইনমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন।
গত ২৯ জানুয়ারি ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা; যা মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করবে বলে ইতোমধ্যে দেশে এর সমালোচনা উঠেছে।
খসড়া আইনের ২১ ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা জাতির পিতার বিরুদ্ধে প্রচার-প্রপাগান্ডা বা তাতে মদদ দিলে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড বা এক কোটি টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
২৮ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে এমন কিছু প্রকাশ বা প্রচার করেন যা ধর্মীয় মূল্যবাধে বা অনুভূতিকে আঘাত করে তাহলে শাস্তি ১০ বছরের জেল বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড পেতে হবে।