প্রশাসনে যানবাহনের জ্বালানি ব্যয় ৪০ কোটি টাকা

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিআইপি ও ভিভিআইপি) জেলা সফরসহ বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনে মোটর ও জলযানের জ্বালানি বাবদ গত অর্থবছরে প্রায় ৪০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Nov 2017, 03:17 PM
Updated : 20 Nov 2017, 03:57 PM

সোমবার সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তার অনুপস্থিতিতে প্রশ্নের উত্তর দেন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক।

এ কে এম শাহজাহান কামালের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, “সরকারের ভিভিআইপি এবং ভিআইপিগণের জেলাসফরসহ বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা প্রশাসনে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহৃত মোটরযান এবং জলযানের জ্বালানি বাবদ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সর্বমোট ৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।”

এরমধ্যে গ্যাস ও জ্বালানি খাতে ব্যয় ছয় কোটি ৪৮ লাখ, পেট্রোল ও লুব্রিক্যান্ট খাতে ৩২ কোটি এবং জলযানে পেট্রোল ও লুব্রিক্যান্ট খাতে ব্যয় এক কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

মন্ত্রী জানান, প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা (উপসচিব থেকে সিনিয়র সচিব পর্যন্ত) সার্বক্ষণিক যানবাহন ব্যবহারের জন্য সরকারি যানবাহন অধিদপ্তর থেকে একটি সিডান কার বরাদ্দ পান। এসব যানবাহন চালানোর জন্য কর্মকর্তারা মাসে ১৮০ লিটার পেট্রোল অথবা সিএনজিচালিত গাড়িতে স্টার্টআপ হিসেবে ২৭ লিটার পেট্রোল ও ২৭০ ঘনমিটার গ্যাস জ্বালানি হিসেবে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় থেকে পেয়ে থাকেন।

ফাইল ছবি

প্রাধিকারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তার কর্মস্থলের গাড়ি সার্বক্ষণিক ব্যবহার করলে নিজ গাড়ি (নগদে কেনা) সচল রাখার প্রয়োজনে মেরামত/সংরক্ষণ, জ্বালানি, ড্রাইভারের বেতন ইত্যাদি বাবদ ২৫ হাজার টাকা পাবেন। আর দপ্তরের গাড়ি সার্বক্ষণিক ব্যবহার না করলে ৫০ হাজার টাকা পাবেন।

মোরশেদ আলমের প্রশ্নে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে সরকারি অফিস, মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরগুলোতে মোট শূন্য পদের সংখ্যা ৩ লাখ ৫৯ হাজার ২৬১ ২৬১টি।   

স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজির প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স বাড়িয়ে ৩৫ বছর করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।

“আগে বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সেশনজট থাকলেও বর্তমানে উল্লেখযোগ্য সেশনজট নেই বললেই চলে। ফলে শিক্ষার্থীরা সাধারণত ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে এইচএসি এবং ২৩/২৪ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করে থাকে। সাধারণ প্রার্থীদের জন্য চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর বিধায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করার পরও তারা চাকরিতে আবেদনের জন্য ৬/৭ বছর সময় পেয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩০ বছর বয়সসীমার মধ্যে একজন প্রার্থী চাকরির জন্য আবেদন করলে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২/১ বছর সময় লাগলেও তা গণনা করা হয় না।”

মন্ত্রী বলেন, “সম্প্রতি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় বর্তমানে শুন্য পদের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই হ্রাস পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানো হলে বিভিন্ন পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থীদের সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়ে যাবে। ফলে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হতে পারে।

“এতে করে যাদের বয়স বর্তমানে ৩০ বছরের বেশি তারা চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পেলেও ৩০ বছরের কম বয়সী প্রার্থীদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে বয়স বাড়িয়ে ৩৫ করার কোনো পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই।”