স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনা এগিয়ে নিতে এ মাসেই মিয়ানমারে যেতে পারেন তিনি।
Published : 08 Oct 2017, 04:04 PM
রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “মিয়ানমার সফরের বিষয়টি আগেই আলোচনায় ছিল। কিন্তু এর মধ্যে মিয়ানমারের ঘটনায় পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তবে এ মাসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী নতুন করে দমন অভিযান শুরুর পর ২৫ অগাস্ট থেকে পাঁচ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘ ওই অভিযানকে চিহ্নিত করেছে রোহিঙ্গাদের ‘জাতিগতভাবে নির্মূলের’ চেষ্টা হিসেবে।
রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিতে আপত্তি জানিয়ে আসা মিয়ানমার সরকারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি আন্তার্জাতিক চাপের মুখে গত ১৯ সেপ্টেম্বর দেশটির পার্লামেন্টে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি বলেন, নব্বইয়ের দশকে করা প্রত্যাবাসন চুক্তির আওতায় ‘যাচাইয়ের মাধ্যমে’ বাংলাদেশে থাকা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে তার দেশ প্রস্তুত আছে।
সে সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব যাচাইয়ের কাজটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রস্তাব দেওয়া হবে।
এরপর সু চির দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে ঢাকায় এসে গত ২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য একটি ‘জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্ত হয় সেখানে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব শহিদুল হকের পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার জন্য বৈঠকে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের প্রতিনিধি দলকে ওই চুক্তির খসড়াও হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আরও আলোচনার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শিগগিরই মিয়ানমার সফরে যাবেন বলে সেদিন জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশ সরকার বলে আসছে, মানবিক কারণ সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সহায়তা দেওয়া হলেও তাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতেই হবে। তার আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ তাদের জরুরি সহায়তা দিয়ে যাবে।
ইতোমধ্যে কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আকার বাড়িয়ে সেখানে সব রোহিঙ্গাকে রাখার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তাদের ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এবং ত্রাণ ব্যবস্থাপনার জন্য চলছে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের কাজ ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, শনিবার পর্যন্ত ৯১ হাজার ৪২৩ জন রোহিঙ্গার নিবন্ধন হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৯ হাজার জনের নিবন্ধন করা হচ্ছে।