ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নতুন ৩৬ ওয়ার্ডে নির্বাচনের আয়োজন করতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) অনুরোধ জানিয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
Published : 21 Aug 2017, 03:15 AM
পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে সুবিধাজনক সময়ে কমিশন সভায় এ বিষয়টি তোলা হবে বলে জানিয়েছেন ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
রোববার তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,‘সম্প্রসারিত ওয়ার্ডগুলোর গেজেটসহ নির্বাচন আয়োজনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গেল সপ্তাহে মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েছি। এখনও এ বিষয়টি কমিশন সভায় উপস্থাপন হয়নি। কখন এ নির্বাচন হবে তা কমিশন নির্ধারণ করবে।’
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৮টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। এছাড়া দুই সিটিতে ৬টি করে ১২টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নির্বাচনের প্রয়োজন হবে। সংরক্ষিত ও সাধারণ সব মিলিয়ে মোট ৪৮টি ওয়ার্ডে প্রয়োজন হবে নির্বাচনের।
দুই সিটি করপোরেশনের সীমানা নির্ধারণ কর্মকর্তারা কাউন্সিলর নির্বাচনের জন্য এসব ওয়ার্ড গঠনের সুপারিশ করলে স্থানীয় সরকার বিভাগ গত ২৬ জুলাই নতুন ওয়ার্ড গঠনের গেজেট জারি করে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পুরাতন ৩৬টির সঙ্গে নতুন ১৮টি ওয়ার্ড যোগ হওয়ায় মোট ওয়ার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪টি। আর দক্ষিণ সিটির ওয়ার্ড সংখ্যা ৫৭টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৭৫টি।
এর আগে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি (নিকার) গত ৯ মে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে নতুন করে মোট ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে, যার মধ্য দিয়ে ঢাকার দুই সিটির আয়তন বেড়ে দ্বিগুণের বেশি হয়।
গত ২৮ জুন ঢাকা সিটির আয়তন বাড়িয়ে গেজেট প্রকাশ করে সরকার।
নতুন ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচনের অনুরোধ জানিয়ে ইসিতে পাঠানো স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মো. শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়- ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৮টি করে ১৬টি ইউনিয়ন নিয়ে সম্প্রসারিত অংশের ওয়ার্ড গঠনের প্রজ্ঞাপনে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং ও এসআরও নম্বর নেওয়ার পর প্রজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে দুই সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত অংশে সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত আসন গঠন কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
নতুন ওয়ার্ডগুলো বর্তমানে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রস্তুত জানিয়ে চিঠিতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির সম্প্রসারিত অংশে নতুন গঠিত ওয়ার্ডগুলোতে নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের পাঠানো চিঠির সঙ্গে দুই সিটি করপোরেশনের এলাকা সম্প্রসারণ করে প্রকাশিত গেজেটের অনুলিপিও রয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সিটি করপোরেশনে নতুন ওয়ার্ড হওয়ায় সুবিধাজনক সময়ে ভোট করতে পারবে কমিশন। তবে একবার নির্বাচনের পর মেয়াদ শেষের আগের ১৮০ দিনের মধ্যে ভোট আয়োজনের বাধ্যবাধকতা আছে।
নতুন ১৬ ইউনিয়ন নিয়ে ৩৬ ওয়ার্ড:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে যুক্ত বাড্ডা, ভাটারা, সাতারকুল, বেরাঈদ, ডুমনি, উত্তরখান, দক্ষিণখান ও হরিরামপুর ইউনিয়নকে ৩৭ থেকে ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে।
আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে যুক্ত শ্যামপুর, দনিয়া, মাতুয়াইল, সারুলিয়া, ডেমরা, মান্ডা, দক্ষিণগাঁও ও নাসিরাবাদ ইউনিয়নকে ৫৮ থেকে ৭৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিভক্ত করেছে সরকার।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত ৩৮, ৩৯ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত আসনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড, ৩৭, ৪১ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ১৪ নম্বর, ৪৩, ৪৪ ও ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ১৫ নম্বর, ৪৬, ৪৭ ও ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ১৬ নম্বর, ৪৯, ৫০ ও ৫১ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ১৭ নম্বর এবং ৫২, ৫৩ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত আসনের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড গঠন করা হয়েছে।
আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সম্প্রসারিত ৭৩, ৭৪ ও ৭৫ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত আসনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড, ৭০, ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ২১ নম্বর, ৬৭, ৬৮ ও ৬৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ২২ নম্বর, ৬৪, ৬৫ ও ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ২৩ নম্বর, ৬১, ৬২ ও ৬৩ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে ২৪ নম্বর এবং ৫৮, ৫৯ ও ৬০ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে সংরক্ষিত আসনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড গঠন হয়েছে।
নতুন করে ১৬টি ইউনিয়ন যুক্ত হওয়ায় ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার আয়তন ১২৯ বর্গকিলোমিটার থেকে বেড়ে ২৭০ বর্গকিলোমিটার হয়েছে।