একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্যে ‘রোডম্যাপ’ করছে নির্বাচন কমিশন। আইন সংস্কার, সংলাপ, সীমানা পুননির্ধারণসহ একগুচ্ছ কাজের অগ্রাধিকার রয়েছে এ রোডম্যাপে।
Published : 18 May 2017, 11:44 PM
আগামী বছরের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরে জন্য দায়িত্ব নিয়ে মেয়াদের তিন মাস পার করে সেই নির্বাচনের কাজ গোছানোয় হাত দিয়েছে।
এরই মধ্যে সংসদের উপ-নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের বেশ কিছু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জন আস্থা তৈরির পথও প্রশস্ত হয়েছে বলে মনে করছেন সিইসি কে এম নূরুল হুদা।
রোডম্যাপ চূড়ান্তের পথে আগামী বছরের ডিসেম্বরেই একাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রাথমিক ভাবনার কথা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানালেন তিনি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রথম তিন মাসেই কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন, কবে নাগাদ চূড়ান্ত হবে?
সিইসি: রোডম্যাপ ২৩ মে চূড়ান্ত হয়ে যাবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: প্রথম তিন মাসে কাজের অগ্রগতি কী দেখছেন?
সিইসি: হঠাৎ করেই সব কিছু তো আর বলা সম্ভব না। তবে আমরা অনেকগুলো নির্বাচন করলাম। এগুলো সাকসেসফুল নির্বাচন হয়েছে। রোডম্যাপটা হলেই কাজের বিস্তারিত সূচিগুলো চূড়ান্ত হয়ে যাবে; এটা হলেই একটা বড় কাজ হবে। তারপরেই ওই প্ল্যান অনুসারে আমরা কাজ করব।
রোডম্যাপ নিয়ে ২৩ মে’র পরে বিস্তারিত কথা বলা যাবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: একাদশ সংসদ নির্বাচন ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে এ ৯০ দিনের মধ্যে কোন্ সময়টা এখনও পর্যন্ত উপযুক্ত মনে করছেন?
সিইসি: নির্বাচনটা ডিসেম্বরে হতে পারে।এটাই উপযুক্ত একটা সময় হতে পারে। হাতে সময় থাকবেও অনেক। দেখা যাক, সময় আসুক…।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: দলগুলোর সঙ্গে কয় দফা সংলাপের কথা ভাবছেন?
সিইসি: ৪০টি নিবন্ধিত দল রয়েছে। একবারই তাদের সঙ্গে বসব। নির্বাচনের আগে একবারের চেয়ে বেশি বসা তো সম্ভব হবে না।
রোডম্যাপটা তৈরি করে এটা ইস্যু দাঁড় করাব। যে আমরা কী নিয়ে আলোচনা করব। দলগুলোর কাছে আমরা কী উপাত্ত আমরা চাই, আমরা কী গাইড লাইন চাই, এটা তাদেরকেও জানাবো। তারপরে …
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: তিন মাসে নতুন কমিশন নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবের পাশাপাশি সমালোচনাও করেছে। এরমধ্যে জনআস্থা অর্জন করতে পেরেছেন বলে মনে করেন কি?
সিইসি: নির্বাচনগুলোর মধ্যে আমাদের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছ ও শক্ত অবস্থান আমাদের এচিভমেন্টের একটা কারণ। এর মাধ্যমে সবার আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। দৃশ্যমান এচিভমেন্ট হচ্ছে আমাদের নির্বাচনগুলো; সামনে রোডম্যাপ হলে তো ধীরে ধীরে অন্য কাজও এগোবে…
ইতোমধ্যে দাতা সংস্থার অনেকে আমাদের কাছে এসেছে, তাদের কথায় মনে হয়েছে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। আমাদের ধারণা, আমাদের ওপর আস্থা তৈরি হয়েছে। আর রাজনৈতিক দল, তারা তো অনাস্থা কেউই দেয়নি; সমালোচনা তো করবেই।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: সবার অংশগ্রহণে ভোট আয়োজনের কথা বলছেন, উদ্যোগও তো থাকছে?
সিইসি: সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন করতে চাই আমরা। নির্বাচনের জন্য তো ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্য ভাগ পর্যন্ত সময় তো হাতে আছে। ২৩ মে রোডম্যাপ হয়ে গেলে একটা ইস্যু দাঁড়াবে। সবার সঙ্গে আলোচনা হবে…
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম: ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়েও সবার মতামতের কথা বলছিলেন…
সিইসি: সব রাজনৈতিক দল চাইলে ইভিএমে ভোট হবে; আমরা করে ফেলব। সবার মতামতের উপরই এটা নির্ভর করবে। ইভিএম নিয়ে আমাদের পথ খোলা থাকল।
আগামী বছর নভেম্বরে-ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণার সম্ভাব্য সময় ধরে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়। তফসিল ঘোষণার অন্তত তিন মাস আগে (২০১৮ সালের অগাস্টের মধ্যে) সব ধরনের কাজ শেষ করার রূপরেখা থাকছে রোডম্যাপে।
ভোটের আগে সংসদ নির্বাচনের অন্যতম পাঁচটি অনুষঙ্গকে অগ্রাধিকার দিয়ে ২০১৮ সালের অগাস্টের মধ্যে সেসব কাজ শেষ করার কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। অনুমোদনের জন্য রোডম্যাপের খসড়া কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। ২৩ মে এ কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।