জাতীয় পিঠা উৎসবের প্রধান অতিথি হিসাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে প্রথম পেয়ে ভাষণ শোনার বায়না ধরলেন আয়োজকরা; কিন্তু রসনা বিলাসের এমন আয়োজনে লম্বা বক্তব্য সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন তিনি।
Published : 23 Jan 2017, 10:06 PM
সোমবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মাঠে শুরু হওয়া দশম জাতীয় পিঠা উৎসবের উদ্বোধনী পর্বে দর্শনার্থীদের মাত্র আড়াই মিনিটের বক্তব্যেই সন্তুষ্ট করেন মুহিত।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চিনি শিল্প করপোরেশনের সহযোগিতায় এই উৎসব আয়োজন করে জাতীয় পিঠা উৎসব উদযাপন কমিটি। নানা স্বাদ ও ডিজাইনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শতাধিক পিঠা স্থান পেয়েছে এই উৎসবে।
মুহিত বলেন, “আমাকে লম্বা ভাষণ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, আপনারা কেউ লম্বা বক্তৃতার অপেক্ষা করবেন না। আমি মনে করি, পিঠা-পুলির উৎসবের মতো আয়োজনে এটা মোটেও সমীচীন নয়।”
“অনুষ্ঠানে বসে বসে ভাবছিলাম পিঠা উৎসবের স্মৃতি নিয়ে। ৭৫ বছর আগের স্মৃতি ভেসে উঠল। এখানে গানবাজনা হয়, খাওয়া-দাওয়া তো হয়ই। পিঠা উৎসব মনে হয়, একমাত্র উৎসব যেখানে পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার হয়। আর জিহ্বার ব্যবহার তো হয়ই।”
“এই উৎসবে অংশ নিয়ে আমি খুবই খুশি। ইতোমধ্যেই আয়োজকরা নিশ্চিত করেছেন, পিঠা আমরা পাব। সুতরাং সেই দিকে যাওয়াই ভালো,” রসিকতা করে বক্তব্যের ইতি টানেন অর্থমন্ত্রী।
সৈয়দ আব্দুল হাদী বলেন, শহরে জন্ম, শহরে বেড়ে উঠা হলেও শৈশবে গ্রাম-বাংলার পরিবেশে ঐতিহ্যবাহী পিঠা খাওয়ার স্মৃতি তারও রয়েছে।
“আগে গ্রামে মানুষের মধ্যে আরও হৃদ্যতা ছিল। নবান্নের সময় অচেনা কাউকে ডেকে পিঠা খাওয়ানো হতো। তৃষ্ণা পেলে অপরিচিত কোনো বাড়িতে গিয়েও পানি চাওয়া যেত। এখন এসব কমে গেছে।”
রামেন্দু মজুমদার বলেন, সব পিঠার মূল উপাদানই চালের গুঁড়া। প্রাচীন বাংলায় বিভিন্ন অঞ্চল, জাতি, বংশ-গোত্র ভিন্ন ভিন্ন পিঠা তৈরি করে নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় সৃষ্টি করতো।
পুলি, ফুল পিঠা, মালপুয়া, চাকা পিঠা, ইলিশ চানা, পাটি সাপটা, চিতই, লবঙ্গ লতিকা, পাকন, মুগ পাকন, ঝিনুক পিঠা, নারিকেল পিঠা, হৃদয় হরণ পিঠা, সতিন মোচড় পিঠা, বিবিয়ানা পিঠাসহ শতাধিক পদের পিঠা রয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।