বৈশাখী উৎসবের মঙ্গল শোভাযাত্রা ‘সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য’ হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দ উদযাপন অনুষ্ঠান করেছে শোভাযাত্রার আয়োজক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ।
Published : 24 Dec 2016, 09:39 PM
শনিবার চারুকলার বকুল তলায় ‘এসো গাহি মঙ্গলের জয়গান’ স্লোগানে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রার সঙ্গে শুরু থেকে যুক্ত ২৭ শিল্পীকে সম্মাননাও দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ‘মঙ্গল শোভাযাত্রার দেশের’ তরুণদের অমঙ্গলের কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে সতর্ক করেন।
তিনি বলেন, “দেশের যে কঠিন সময়গুলো আমাদের পার করতে হয়েছে, তার বিভিন্ন চিত্র-ছবি মঙ্গল শোভাযাত্রায় ফুটে উঠেছে বার বার। দেশের মানুষসহ সারা বিশ্বের মঙ্গল কামনায় পরিচালিত হয়ে আসছে এই অনুষ্ঠান।
“যে দেশে মঙ্গল শোভাযাত্রা আছে, সে দেশের তরুণরা অমঙ্গল করবে এমনটা হওয়া উচিত নয়।”
গত ৩০ নভেম্বর বাংলা বর্ষবরণের অন্যতম অনুষঙ্গ মঙ্গল শোভাযাত্রাকে ‘ইনটেনজিবল কালচারাল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা নিজেদের ওয়েবসাইটে জানায় জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো।
এ উপলক্ষে আয়োজিত আনন্দ উদযাপন অনুষ্ঠানে মঙ্গল শোভাযাত্রার শুরুর সময়ে যুক্ত শিল্পী সাখাওয়াত হোসেন, কামরুল আহসান খান, মাহবুবুলর রহমান, এসএম ফারুকুজ্জামান হেলালসহ ২৭ শিল্পীকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়।
এছাড়া শোভাযাত্রাকে বিশ্বের দরবারে উপস্থাপনা করে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আনার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালনের জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমি ও ইউনেস্কোয় বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও ফ্রান্সে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল ইসলামকে সম্মাননা দেওয়া হয়।
সম্মাননা তুলে দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ, বাংলা একাডেমির পক্ষে থেকে মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান এবং এম শহীদুল ইসলামের পক্ষে সংস্কৃতি সচিব আকতারী মমতাজ সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, “আমাদের সংস্কৃতিগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গৃহীত হওয়ার জন্য যে এক্সপার্টিজ দরকার, যে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দরকার তা কেবল বাংলা একাডেমির আছে। আমাদের দেশের কার্যক্রমকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছাতে এক্সপার্ট লোক আরও বেশি দরকার।”
গত শতকের ৮০ এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের উদ্যোগে পহেলা বৈশাখে এই মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন শুরু হয়। তারপর থেকে প্রতিবছরই বর্ষবরণে মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এতে উৎসাহিত হয়ে ঢাকার বাইরেও একই ধরনের শোভাযাত্রা বের হচ্ছে পহেলা বৈশাখে।