রাজধানীর পূর্ব আশকোনায় জঙ্গি আস্তানা থেকে চারজনের আত্মসমর্পণের পর এক নারী একটি শিশুকে নিয়ে বেরিয়ে এসে দেহের সঙ্গে থাকা বিস্ফোরকের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
Published : 24 Dec 2016, 12:35 PM
শনিবার ভোররাত থেকে পুলিশি অভিযানের মধ্যে দুপুর ১টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে ওই নারী বেরিয়ে আসেন।
অভিযানে থাকা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তা অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “বোরকা পরা ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে বাইরে এসেই তার বোরকার ভেতরে থাকা বেল্টে হাত দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটান।”
পুলিশ কাউকে কাছে ভিড়তে না দিলেও এই সময় ওই বাড়িতে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গিয়েছিল। স্থানটিও ধোঁয়ায় ভরে যায়।
ওই নারী জঙ্গি সুমনের স্ত্রী বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তার সঙ্গে থাকা মেয়েটি ইকবালের (পরিচয় জানা যায়নি) মেয়ে বলে জানিয়েছেন তারা।
ওই নারী রক্তাক্ত অবস্থায় ওই বাড়ির প্রাঙ্গণেই রয়েছেন। আরও এক জঙ্গি ভেতরে থাকায় পুলিশ ওই নারীকে উদ্ধার করতে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছেন ছানোয়ার।
শিশুটিকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জঙ্গিনেতা তানভীর কাদেরীর কিশোর ছেলে শহীদ কাদেরী এখনও তিন তলা ওই বাড়ির নিচ তলার আস্তানায় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা। তার অবস্থা কী, তা জানা যায়নি।
গুলশান হামলার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার মধ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি বাড়িতে অভিযানের সময় টিকতে না পেরে তানভীর কাদেরী আত্মহত্যা করেছিলেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
তখন কাদেরীর দুই জমজ ছেলের একজন এবং স্ত্রী আবেদাতুল ফাতেমা ওরফে খাদিজা আহত অবস্থায় পুলিশের হাতে ধরা পড়েছিলেন।
নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষনেতা সাবেক মেজর জাহিদুল ইসলামের স্ত্রী জেবুন্নাহারসহ চারজন সকালে ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পিস্তলসহ পুলিশের হাতে ধরা দেন।
হজ ক্যাম্পের কাছে তিনতলা ওই বাড়ি সূর্যভিলা ভোররাতে ঘিরে ফেলে অভিযান শুরু করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
এই শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম তখন বলেছিলেন, নব্য জেএমবির বেশ কয়্জেন সদস্য ভেতরে আছেন বলে তথ্য পাওয়ার পর অভিযানে নামেন তারা।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে মিরপুরের রূপনগরের একটি বাসায় পুলিশের অভিযানে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জাহিদুল নিহত হন। তারপর থেকে তার স্ত্রীকে খুঁজছিল পুলিশ।
চারজনের আত্মসমর্পণের পর ওই বাড়িতে কাদেরীর ছেলেসহ তিনজন ছিলেন বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “ভেতরে তিনজন রয়েছেন। তাদের কাছে প্রচুর এক্সপ্লোসিভ (বিস্ফোরক) ও সুইসাইডাল ভেস্ট রয়েছে।”
ঘটনাস্থলে থাকা উত্তরা ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, “যারা ভেতরে আছে তাদের বারবার অত্মসমর্পণ করতে বলা হচ্ছে। কিন্তু তারা ভেতর থেকে বলছে-তাদের শরীরে গ্রেনেড বাঁধা, গ্রেপ্তারের চেষ্টা করলে বিস্ফোরণ ঘটাবে।”
হজ ক্যাম্পের কাছে তিনতলা ওই বাড়ি সূর্যভিলা ভোররাতে ঘিরে ফেলে অভিযান শুরু করে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট।
এই শাখার প্রধান মনিরুল ইসলাম তখন বলেছিলেন, নব্য জেএমবির বেশ কয়েকজন সদস্য ভেতরে আছেন বলে তথ্য পাওয়ার পর অভিযানে নামেন তারা।