মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের ৪৫তম বার্ষিকীতে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সাম্প্রদায়িকতাকে রুখে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।
Published : 16 Dec 2016, 03:56 PM
শুক্রবার সকালে বিজয় দিবসে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে বিজয় শোভাযাত্রা শুরুর আগে নাট্যকর্মী-শিল্পী-সংগঠকরা এ আহ্বান জানান।
‘ঐক্য গড়ো বাংলাদেশ, সাম্প্রদায়িকতার হবে শেষ’- এই স্লোগান নিয়ে শহীদ মিনার থেকে দোয়েল চত্বর-কদম ফোয়ারা-শাহবাগ হয়ে টিএসসিতে এসে এই শোভাযাত্রা শেষ হয়।
শোভাযাত্রার উদ্বোধন করে নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার বলেন, “আজকের বিজয় রাজনৈতিক কিংবা ভৌগলিক বিজয় নয়, এটি অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, হিংসার বিরুদ্ধে অহিংসার, দুরবস্থার বিরুদ্ধে সুস্থ ও সুন্দরের বিজয়।”
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে সাম্প্রদায়িকতা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে মন্তব্য করে তিনি এ ‘বিষবাষ্প’ মোকাবেলায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
স্বাধীনতার সকল স্মৃতিচিহ্ন ও গণকবর সংরক্ষণের তাগিদ দিয়ে রামেন্দু মজুমদার বলেন, “সারা দেশে আজও স্বাধীনতার অনেক স্মৃতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। অনেকগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে, অনেকগুলো হয়নি। গণকবরগুলো চিহ্নিত হলেও সেগুলো যথাযথ সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম জানতে পারে এদেশের জন্য কতটা মূল্য দিতে হয়েছে।”
জোট সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, পাকিস্তানের বদলে বাংলাদেশ নাম আর চাঁদ-তারার পরিবর্তে লাল সবুজ পতাকার জন্য শুধু ৩০ লাখ মানুষ জীবন দেয়নি।
“আমরা চেয়েছিলাম এমন একটি দেশ, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ শান্তি ও সম্প্রীতির সঙ্গে বসবাস করবে। যে বাংলাদেশে প্রতিটি মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে- এ জন্যই বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। এজন্যই সংবিধানে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদকে মূলনীতি করা হয়েছিল।”
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংবিধানের মূলনীতি থেকে দেশ সরে এলে বাংলাদেশ তার মূল আদর্শ ও লক্ষ্য থেকে সরে যায় বলে মন্তব্য করেন গোলাম কুদ্দুছ।
তিনি বলেন, “এদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। দীর্ঘ লড়াইয়ের পর আমরা আবার পথে ফিরেছি।”
সাম্প্রদায়িক শক্তি দেশকে পিছিয়ে দিতে এখনও ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ঢোল-বাদ্যের তালে তালে নেচে গেয়ে এই বিজয় শোভাযাত্রায় অংশ নেন।