জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে নতুন করে জেরার আবেদন নাকচ হওয়ার পর মামলা স্থগিতের যে দুটি আবেদন খালেদা জিয়া করেছেন, তা শুনানি হবে হাই কোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে।
Published : 21 Apr 2016, 05:39 PM
বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর অবকাশকালীন হাই কোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই সিদ্ধান্ত দেয়।
এখন সুপ্রিম কোর্টে গ্রীষ্মকালীন অবকাশ চলছে। ১৭ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া অবকাশ ও ছুটি শেষে ২ মে নিয়মিত বেঞ্চ বসছে।
মামলাকারী দুর্নীতি দমন কমিশনের কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন আবেদন দুটি সংশ্লিষ্ট শাখায় যাবে, আদালত খোলার পর নিয়মিত বেঞ্চে ওঠবে।”
এই মামলায় বিচারিক আদালতে ২৫ এপ্রিল খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
বিচারের শেষ পর্যায়ে থাকা এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য নিয়ে আপত্তি তুলে খালেদার আইনজীবীরা ১৭ এপ্রিল নতুন করে সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার আবেদন করলে ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার তা নাকচ করে দেন।
ওই আদেশ বাতিল চেয়ে পরদিন হাই কোর্টে দুটি আবেদন করেন খালেদা জিয়া, যা ১৯ এপ্রিল অবকাশকালীন এই বেঞ্চে উপস্থাপন করেন তার আইনজীবীরা।
তারা বলেছিলেন, তদন্ত কর্মকর্তার জেরা পুনরায় গ্রহণ এবং তদন্ত নথি (কেস ডকেট) প্রদান ও দেখানোর আবেদন বিচারিক আদালত খারিজ করে। ওই আদেশ বাতিল ও মামলার কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে তারা হাই কোর্টে আবেদন দুটি করেন।
এর ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার আবেদন দুটি বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর বেঞ্চের কার্যতালিকার ৪৯ ও ৫০ ক্রমিকে ছিল। ক্রম অনুসারে বিষয়টি এলে আদালত ওই সিদ্ধান্ত জানান।
আদালতে খালেদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ জে মোহাম্মদ আলী, জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, সগীর হোসেন লিওন ও ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান।
দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল উপস্থিত ছিলেন।
মামলা বৃত্তান্ত
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ অগাস্ট ৫ জনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জিয়াউর রহমানের নামে খোলা এই দাতব্য প্রতিষ্ঠানের অর্থ আত্মসাতের এই মামলায় তার স্ত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা ছাড়াও আসামি করা হয় তার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ-এর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খানকে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদাসহ চারজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেন। পরের বছরের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিচার শুরু হয়।
তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য ও জেরা শেষে আদালত খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ২৫ এপ্রিল তারিখ রেখেছে।