দুদক চেয়ারম্যানের কাছে কমিশনারদের জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আইনের ১২(২) ধারা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের মৌলিক নীতি ও আইনের তিনটি ধারার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে বাতিল ঘোষণা করে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট।
Published : 19 Nov 2015, 09:03 PM
একটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেয়।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আগামী রোববার আপিল বিভাগে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন দুদকের কৌঁসুলি খুরশীদ আলম খান।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ১২ (২) ধারায় বলা হয়েছে, “চেয়ারম্যানের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে অন্যান্য কমিশনারগণ তাহাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবেন এবং সেইরূপ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের নিকট কমিশনারগণের জবাবদিহিতা থাকবে।”
২০০৪ সাল প্রণীত দুদক আইনের এই ধারা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. কামাল হোসেন চলতি বছরের জুনে রিট আবেদনটি করেন।
প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৪ জুন হাই কোর্ট রুল দেয়। রুলে দুদক আইনের ১২ (২) ধারা স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশনের মৌলিক নীতি ও আইনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কেন তা বাতিল করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
রাষ্ট্রপতির সচিব, আইন সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, সব কমিশনার ও দুদক সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
এই রুলের উপর চার দিন শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার আদালত রুল মঞ্জুর (অ্যাবসলিউট) করে রায় দেয়।
আদালতে রিট আবেদনকারী আইনজীবী কামাল হোসেন নিজে শুনানি করেন। দুদক চেয়ারম্যানের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান।
কমিশনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এস এম আবদুর রউফ ও হাসিনা মমতাজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু।
রায়ের পর কামাল হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইনের ৩(২) ধারা অনুসারে দুদক স্বাধীন। এর ১৫ (১) এর ধারা অনুযায়ী, সব সিদ্ধান্ত হবে কমিশন সভায়। ধারা ২৪ অনুসারে কমিশনারগণ স্বাধীনভাবে কাজ করবে।
“কমিশনারদের জবাবদিহির বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে ১২(২) ধারায়। কমিশনারদের যদি চেয়ারম্যানের কাছে দায়বদ্ধ রাখা হয়, তাহলে স্বাধীন সংস্থা হিসাবে এ প্রতিষ্ঠানের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে বলে যুক্তি দিয়েছি।”
১২(২) ধারাটি অন্য তিনটি ধারার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ বিবেচনায় নিয়ে আদালত তা বাতিল ঘোষণা করেছেন, বলেন এই আইনজীবী।
কামাল হোসেন জানান, আদালত কমিশনের চেয়ারম্যান ও মহাপরিচালক (প্রশাসন) এককভাবে ইতোপূর্বে নেওয়া সাতটি সিদ্ধান্তও অবৈধ ঘোষণা করেছে।
“তবে অতীত বিবেচনায় এ নিয়ে ভবিষ্যতে প্রশ্ন তোলা যাবে না বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন আদালত।”