জনাকীর্ণ এলাকা, ধর্মীয় স্থাপনা ও রাজনৈতিক সমাবেশসহ বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচারে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হতে পারে বলে যুক্তরাজ্যের হাই কমিশন তাদের হালনাগাদ ভ্রমণ সতর্কতায় তুলে ধরেছে।
Published : 03 Dec 2024, 11:24 PM
সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি থাকার আশঙ্কা প্রকাশ করে যুক্তরাজ্য বিদেশি নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছে।
মঙ্গলবার ঢাকায় যুক্তরাজ্যের হাই কমিশন বাংলাদেশে ভ্রমণবিষয়ক হালনাগাদ পরামর্শে এ সতর্কতার কথা তুলে ধরে।
এতে অতি প্রয়োজন না হলে পার্বত্য তিন জেলায় ভ্রমণ করতেও নিরুৎসাহিত করা হয়।
বাংলাদেশে ভ্রমণ সতর্কতা দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, জনাকীর্ণ এলাকা, ধর্মীয় স্থাপনা ও রাজনৈতিক সমাবেশসহ বিভিন্ন জায়গায় নির্বিচারে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হতে পারে।
এতে বলা হয়, কিছু গোষ্ঠী এমন ব্যক্তিদের লক্ষ্য করেছে, যাদের জীবনচারণ ও মতামত ইসলামের পরিপন্থি বলে তারা মনে করে।
‘মাঝেমধ্যে সংখ্যালঘু ধর্মীয় গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হামলা হয়েছে এবং পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করা হয়েছে’ তুলে ধরে হাই কমিশন বলেছে, প্রধান শহরগুলোতে হওয়া এসব হামলায় বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে।
কোনো দেশে বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হলে ভ্রমণ বিষয়ে এমন সতর্কতা যুক্তরাজ্য প্রায়ই দিয়ে থাকে। বাংলাদেশ নিয়ে আগেও এমন সতর্কতা দিয়েছে দেশটি। রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপের পরিস্থিতি তৈরিতে সতর্ক থাকার কথা বলেছিল দেশটি।
পরিকল্পিত এসব হামলা বন্ধে বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের কাজ করে যাওয়ার কথা তুলে ধরে এতে বলা হয়, খুব অল্প সময়ের নোটিসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো এবং চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
সতর্কতায় কী করতে হবে, এ বিষয়ে হাই কমিশন চারপাশ সম্পর্কে সচেতন থাকার পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে পুলিশের স্থাপনাগুলোর ভেতরে ও বাইরে সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ দিয়েছে।
এছাড়া বড় সমাবেশ এবং পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি আছে এমন জায়গা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে হাই কমিশন। স্থানীয় কর্তৃপক্ষের পরামর্শও মেনে চলতে বলা হয়েছে বিদেশি নাগরিকদের।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের হাই কমিশন বলেছে, জুলাই ও অগাস্টে বাংলাদেশজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে এবং এতে অনেক হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি এখনো ‘অস্থির’ থাকার কথা তুলে ধরে হালনাগাদ এ সর্তকর্তায় বলা হয়, “রাজনৈতিক সমাবেশ ও বিক্ষোভ এখনো অব্যাহত রয়েছে। এসব সমাবেশ ও বিক্ষোভ দ্রুত সহিংস হয়ে উঠতে পারে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে।
“দেশজুড়ে শহর ও নগরে বিক্ষোভ ও ধর্মঘটের (হরতাল) সময় সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটতে পারে এবং এসব ঘটনা প্রাণঘাতীও হয়ে উঠতে পারে। সম্পদ ও গণপরিবহনের ওপর হামলার সম্ভাবনাও আছে।”
সাম্প্রতিক সময়ের অস্থিরতা বাংলাদেশ পুলিশের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রভাব ফেলেছে মন্তব্য করে যুক্তরাজ্যের হাই কমিশন বলেছে, সারাদেশেই কিছু থানায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং সেগুলোর বেশির ভাগ আবার সচল হলেও সব পুলিশ সদস্য এখনও কাজে ফেরেননি।
ঢাকা ও অন্যান্য শহরে অপরাধী চক্রের তৎপরতার পাশাপাশি সশস্ত্র ডাকাতি, সহিংস অপরাধ ও ধর্ষণের সম্ভাব্য হুমকি থাকার কথাও বলা হয়েছে সর্তকর্তায়।