“তদন্ত না হওয়ার আগে আগুনের কারণ বলা যাচ্ছে না,” বলেন তিনি।
Published : 26 Dec 2024, 02:44 PM
সচিবালয়ের মতো ‘সুরক্ষিত’ জায়গায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সবাই ‘উদ্বিগ্ন’ বলে মন্তব্য করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্থ ভবন পরিদর্শন শেষে তিনি বলেছেন, “যখন আগুন লেগেছে তখন অফিস বন্ধ ছিল, এতো সুরক্ষিত জায়গায় আগুন লেগেছে- যা সবাইকে উদ্বিগ্ন করেছে।”
বুধবার গভীর রাতে সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুনের সূত্রপাত হয়। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় ১০ ঘণ্টা পর সেই আগুন নেভানো সম্ভব হয়।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, ৬, ৭, ৮, ৯ এই চারটি তলা আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে অষ্টম ও নবম তলায় ক্ষতি হয়েছে বেশি, সেখানকার অধিকাংশ নথি পুড়ে গেছে।
ফারুক ই আজম বলেন, “উপরের জায়গাগুলোতে করিডোরে অনেক ক্ষতি হয়েছে। অনেক অফিস ক্ষতি হয়েছে। আগুনে চারটা ফ্লোরে ক্ষতি হয়েছে।”
আগুনের কারণ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এখন এ কথা বলা যাচ্ছে না। তদন্ত না হওয়ার আগে বলা যাচ্ছে না।
“এজন্য তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। আশা করছি, পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পর জানতে পারব- কেন আগুনটা লেগেছে।”
সচিবালয়ের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত সচিব (জেলা ও মাঠ প্রশাসন) মোহাম্মদ খালেদ রহীমকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সরকার। এ কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর সচিবালয়ের কাজ চলছে জানিয়ে দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, “কিছু স্থাপনা করা হয়েছে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে যাওয়ার জন্য, সিঁড়ির মতো করা হয়েছে।
“সেজন্য ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি ঠিক সময়ে যেতে পারেনি। ফায়ার সার্ভিসের ডিজির মতে ঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারলে আরও দেড় ঘন্টা আগে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারত।”
এর আগে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামালও বলেছিলেন, ফায়ার সার্ভিসের বড় গাড়ি ঢুকতে না পারায় কাজে বেগ পেতে হয়েছে।
“সামনের গেইট ভেঙে দুটো গাড়ি ঢুকিয়েছি।”
গুরুত্বপূর্ণ নথি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে ফারুক ই আজম বলেন, “এখনই বলা যাচ্ছে না। পুরাটা ওপেন করা হয়নি।”
আগুন নেভানোর কাজে পানির লাইন দিতে গিয়ে সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় ট্রাক চাপায় গুরুতর আহন হন সোয়ানুর জামান নয়ন নামের একজন ফায়ার ফাইটার। পরে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
রাতে অগ্নিকাণ্ডের সময় দশ তলা ওই ভবনের উপরের দিকের একটি ফ্লোর এমাথা-ওমাথা জ্বলতে দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে অনেকেই সোশাল মিডিয়ায় সন্দেহ প্রকাশ করেন।
এই আগুনকে অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র’ হিসেবে দেখছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
তবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সচিবালয়ের আগুনের পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র কাজ করেছে কি না তা তদন্তের আগে বলা যাবে না।
আর অগ্নি নির্বাপণে অংশ নেওয়া নৌবাহিনীর সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেছেন, “শর্ট সার্কিট থেকে নয়, এটা পরিকল্পিতভাবে হয়ত আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।”