২০২৫ সালের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে বলে ধারণা দেন আইন উপদেষ্টা।
Published : 18 Oct 2024, 05:32 PM
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
তিনি বলেছেন, নতুন নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা হালনাগাদ করে আগামী বছরের মধ্যে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে চ্যানেল আইয়ের সংবাদ পর্যালোচনামূলক অনুষ্ঠান 'আজকের সংবাদ’-এ' দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন আইন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “আমার কাছে মনে হয়, রিয়েস্টিক্যালি আগামী বছরের মধ্যে (২০২৫) ইলেকশন করাটা হয়ত সম্ভব হতে পারে।”
গত ৫ অগাস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের এক মাসের মাথায় ৫ সেপ্টেম্বর বিদায় নেয় কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন, যাদের অধীনে এ বছরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন হয়েছিল।
বিদ্যমান ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ’ আইন, ২০২২ অনুযায়ী শূন্য পদে নিয়োগ দিতে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি করার বিধান রয়েছে। সবশেষ নির্বাচন কমিশনই এ আইনের অধীনে প্রথম নিয়োগ পেয়েছিল।
৫ অগাস্টের পর রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষপদে পদত্যাগের হিড়িকের পর সাংবিধানিক পদসহ নানা স্তরে শূন্যপদ পূরণ হচ্ছে ধীরে ধীরে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজে হাত দিয়েছে। সরকারের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, সংস্কারের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফেরার মত পরিস্থিতি হলেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার টেলিভিশনের ওই অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল নির্বাচন প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, “কয়েকটা ধাপ আছে। যেমন ধরেন, আমরা যখন নির্বাচন নিয়ে চিন্তা করলাম, তখন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নিশ্চয় ভুয়া নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচন হোক তা কখনোই চান না।
“নতুন নির্বাচন কমিশন করার জন্য একটা সার্চ কমিটি করা লাগবে। সার্চ কমিটি গঠন করতে গিয়ে দেখলাম, সার্চ কমিটিতে পিএসসির চেয়ারম্যান লাগবে। পিএসসির চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়া হল। পিএসসির চেয়ারম্যান নিয়োগও তো একটা পদ্ধতি। এখন এ সার্চ কমিটি গঠিত হবে। এরপর নির্বাচন কমিশন হবে।”
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন হওয়ার পর প্রথম কাজই হবে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা।
“ভোটার তালিকার নামে ২০২৪ এর নির্বাচনে অরাজকতা করেছিল। ২০২৪ সালে ভোটার তালিকার নামে কী করেছে তা নিয়ে অনুসন্ধান করা দরকার।”
সঠিক ভোটার তালিকা তৈরির ওপর জোর দিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, “এ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যে সার্চ কমিটি হচ্ছে। এখন ভোটার তালিকা নির্বাচন কমিশন ছাড়া কেউ আদেশ দিতে পারে না। ইসির আদেশে তা হবে, এটা ইসির কাজ।
“ধাপগুলো চিন্তা করতে হবে। সার্চ কমিটি করলাম; তারপর নির্বাচন কমিশন হবে। এরপর ভোটার তালিকা হবে। তারপর নির্বাচন হবে।”
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এর আগে বলেছিলেন, ১৮ মাসের মধ্যে দেশে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন। সেক্ষেত্রে কতদিনের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে, সেই প্রশ্ন আইন উপদেষ্টার সামনে রাখা হয়।
জবাবে তিনি বলেন, “সেনাপ্রধান কেন বলেছেন আমি জানি না। তবে আমার কাছে মনে হয়, বাস্তবিকভাবে আগামী বছরের মধ্যে ইলেকশন করাটা হয়ত সম্ভব হতে পারে।”
তাহলে ২০২৫ সালেই কি নির্বাচন হতে পারে? এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “ হ্যাঁ। আরও অনেকগুলো ফ্যাক্টর তো রয়েছে। অনেক ধরনের ফ্যাক্টর রয়েছে; এটা আমার প্রিলিমিনারি অ্যাজাম্পশন।”
পুরনো খবর
ইউনূস সরকারের সাফল্যের জন্য পাশে আছি: সেনাপ্রধান
নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে মন্তব্য সেনাপ্রধানের ব্যক্তিগত মতামত: প্রেস সচিব