“আমরা এখন ভাবছি আশুলিয়াকে নো ব্রিকফিল্ড ঘোষণা করবো কী না।“
Published : 19 Dec 2024, 05:10 PM
বায়ু দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে এই শহরের মানুষকে মাস্ক ও এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করার পরামর্শ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
বছর খানেকের মধ্যে বায়ু দুষণ কমানো ‘সম্ভব নয়’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ ভবনে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন রিজওয়ানা হাসান।
উপদেষ্টা বলেন, “আমরা বলছি মাস্ক কথা, আমরা মাস্ক কেন পরতে বলছি এটা অন্যভাবে নেওয়ার কোন কারণ নেই।করোনাভাইরাসের সময় মাস্ক কেন পরেছিল কেন মানুষ?
“বায়ু দূষণের ৩০ ভাগ আসে আশপাশের দেশ থেকে, আর ২৮ ভাগ আসে প্লান্ট থেকে। রাতারাতি এটা অ্যাড্রেস করা সম্ভব না। চীনের মত দেশেরও ১০ বছর লেগেছে দূষণ কমাতে। জনদুর্ভোগ কমাতে চেষ্টা করবো। দয়া করে বাসাতে একটা করে এয়ার পিউরিফায়ার রাখুন। তবে এয়ার পিউরিফায়ার অনেক দাম। এটা হচ্ছে ট্যাক্সের কারণে। কোন কোন ক্ষেত্রে ৮৯ শতাংশ ট্যাক্স আছে।আগামী সপ্তাহে আশা করি এনবিআর একটা ভালো সংবাদ আমাদের দিবে তাহলে অনেকের সাধ্যের মধ্যে এটা চলে আসবে।”
বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বয়হনীতা আছে কী না প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা বলেন, “সমন্বয়হীনতা যাতে না থাকে এর জন্য একটা টাক্সফোর্স করে দেওয়া হয়েছে। এখন বায়ু দূষণের কথাটা এ বছরই প্রথম শুনেন নাই। এই ১৫ সাল থেকেই শুনছেন। কিন্তু বায়ু দূষণ কমানো একমাস দুই মাস বা এক বছরে কমানো সম্ভব না। আমরা এখানে মিথ্যা কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে পারব না।
আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের পর্যবেক্ষণে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ঢাকার শহারের নাম কয়েববার তালিকার ওপরের দিকে দেখা গেছে।
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার ঢাকার গত ৮ বছরের বায়ুদূষণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেছেন, এ সময়ের ২৭০২ দিনে মাত্র ৫৭ দিন নির্মল বাতাস পেয়েছে রাজধানীবাসী। বাকি দিনগুলোর বাতাস খুবই অস্বাস্থ্যকর ও বিপজ্জনক ছিল।
তিনি বলেছেন, নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত- পাঁচ মাসে সারা বছরের প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ ভাগ বায়ুদূষণ হয়।
শীতকালে ঢাকার অস্বাস্থ্যকর বাতাসে শ্বাসকষ্টজনিত রোগ প্রায় দেড়গুণ বেড়ে যায় বলেও জানিয়েছেন বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ কাজী সাইফুদ্দিন বেন নূর।
জনদুর্ভোগ কমানোর উদ্যোগ নিয়ে রিজওয়ানা বলেন, “এখানে জনদুর্ভোগ হয় গাড়ির কালো ধোঁয়া থেকে হয়, ইটভাটা থেকে যে দূষণটা হচ্ছে, স্টিল মিল থেকে যে দূষণটা হচ্ছে সেটা কমিয়ে জনদুর্ভোগ কিছুটা কমিয়ে আনা যাবে। ঢাকা শহরের বিভিন্ন ডিভাইডার বা অনাবৃত যে জায়গা পড়ে থাকে সেখানে থেকে ধুলা উড়ে প্রয়োজনে সেখানে ঘাস লাগিয়ে দেওয়া যাবে।
“অনেক ভাঙা রাস্তা আছে, যে গুলো থেকে ধূলা উড়ে। আরেকটা হচ্ছে আশুলিয়া থেকে বেশিরভাগ ইটের ধোঁয়া আসে। আমরা এখন ভাবছি আশুলিয়াকে নো ব্রিকফিল্ড ঘোষণা করবো কী না। কারণ দেখেন, আশুলিয়াতে যদি দুইশত ইটভাটা থাকে একেটা ইটভাটার বিরুদ্ধে এক একজন ম্যাজিস্ট্রেটে ব্যবস্থা নিতে গোটা একটা দিন লেগে যায়। আমার তো সারা দেশে ১০ হাজার ইট ভাটা। ফলে এই টাক্সফোর্স নিয়মিত কাজ করবে। পানি ছিটিয়ে বায়ু দূষণ কমানো যায় না, এটা জনদুর্ভোগ কমানোর জন্য।”
যারা কিনতে পারবে না, তাদের জন্য কি করবেন এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “তাদের জন্য এই কাজগুলো করছি, রাস্তা মেরামত করা পানি ছিটানো গাছ লাগানো।”
পৃথক সংস্কার কমিশন চায় পুলিশ
উপস্থিত আইজিপি বাহারুল আলম সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন “পুলিশ আলাদা সংস্কার কমিশন চাইছে যাতে রাজনৈতিক প্রভাব যতটা কমিয়ে আনা যায়। পুলিশ যেন যতটা নিরপক্ষভাবে আইন প্রয়োগ করতে পারে।
“পুলিশ সংস্কার কমিশন আলাদাভাবে কাজ করছে। উনারা বিভিন্ন সময় বলেছেন পুলিশে বিরাজনীতিকরণ করার জন্য। রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্তির জন্য। আমরা মনে করি কোনো না কোনো একটা পথ বের করা উচিৎ।”
যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা চেয়েছেন আইজিপি।
“যেন সকলে মিলে কিছুটা হলেও যেন রিলিফ দিতে পারি। এটা দীর্ঘদিনের সমস্যা,এটা নিয়ে আমরা কাজ করছি, আমরা চেষ্টাটা করব।”