ট্রেনটির পাঁচটি কোচের ২৯টি জানালার কাঁচ ভেঙেছে।
Published : 18 Nov 2024, 04:11 PM
রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে ছোড়া ঢিলে একটি ট্রেনের বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছে।
সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মহাখালী রেলক্রসিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন রেলের মহাপরিচালক সরদার সাহাদাত আলী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বেলা পৌনে ১২টার দিকে নোয়াখালী থেকে আসা উপকূল এক্সপ্রেস মহাখালী পার হচ্ছিল। এ সময় আন্দোলনকারীরা ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ করলে কয়েকজন যাত্রী আহত হন।
“তারা ট্রেনে পাথর মারে। এতে পাঁচটি কোচের জানালার ২৯টি কাঁচ ভেঙে যায়। আর কয়েকজন যাত্রী আহত হন। আহতদের আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি।"
আহতদের মধ্যে শিশুও আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা রেলওয়ে থানার ওসি জয়নাল আবেদিন।
তিনি বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইট-পাটকেলে ট্রেনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
“জানালার কাঁচ ভেঙে ভেতরে থাকা শিশুসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়েছেন। তবে কতোজন আহত হয়েছেন সঠিক সংখ্যাটি আমার জানা নেই।"
সোমবার বেলা ১১টায় মহাখালীর আমতলী, কাঁচাবাজার এবং রেলক্রসিংয়ে শত শত শিক্ষার্থী জড়ো হন।
দুপুরে রেলক্রসিংয়ে অবস্থান নিয়ে একদল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তাদের দেখে উপকূল এক্সপ্রেসের লোকোমাস্টার ব্রেক কষেন। তবে ট্রেনটি থামে অবরোধস্থল পার হওয়ার পর।
সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তে শিক্ষার্থীরা রেল লাইন থেকে সরে যাওয়ায় অল্পের জন্য তারা প্রাণে বেঁচে যান। ততোক্ষণে কেউ কেউ ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে পাথর ছুড়ে মারেন।
এদিকে মহাখালীতে অবরোধের কারণে ঢাকার সঙ্গে সারাদেশের ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন কমলাপুর স্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন ।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা রেললাইন ব্লক করেছে। ওখানে একটা ট্রেন আটকে আছে জানি, কোনটা এখনও শিউর হতে পারিনি। আমাদের কন্ট্রোল রুমে কথা বললাম তারা বলেছেন কোনো ট্রেন এখন ছাড়ছে না।”
দাবি বাস্তবায়নে সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চলবে বলে ঘোষণা এসেছে আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে।
অবস্থান নেওয়ার আগে তারা কলেজ ক্যাম্পাস ও সামনের সড়কে তিতুমীরকে বিশ্ববিদ্যালয় করার এক দফা দাবিতে খণ্ড খণ্ড মিছিল করে।
মহাখালী রেললাইন এবং দুপাশের সড়কে কিছু শিক্ষার্থী সড়ক, রেললাইনের উপরে বসে পড়েছেন। তারা কোনো যানবাহন চলাচল করতে দিচ্ছেন না।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম তিতাস বলেন, “আমরা আমাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাস্তায় এসেছি। গত ২৭ বছর ধরে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করার দাবি জানিয়ে আসছি।
“কিন্তু দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। জগন্নাথ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেছে। আমাদের ৫৮ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। কিন্তু আমাদের ন্যায্য দাবি পূরণ করছে না।”
গণিত বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আল নোমান নীরব বিডিনিউজ টোয়েন্টিয়ফোর ডটকমকে বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর কমিশন গঠনের ব্যাপারে মন্ত্রণালয় থেকে বা নির্দিষ্ট দায়িত্বশীলদের কাছ থেকে আমরা স্পষ্ট কোনো আশ্বাস পাই, ততক্ষণ পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ থাকবে।”